শ্যামলী

                            ধিক্কার হত মনে,

                           বলতেম দাঁত কামড়ে,

                              “ যাব না আর কক্‌খনো। ”

                              যেতে হত দুদিন বাদেই

                          কুলতলার গলি দিয়ে লুকিয়ে।

                   মুখ বাঁকিয়ে বসে রইত কনি

                           দুদিন না - আসার অপরাধে।

                   হঠাৎ বলে উঠত,

                          “ আড়ি, আড়ি, আড়ি। ”

                   আমি বলতুম, “ ভারি তো। ”

         ঘাড় বাঁকিয়ে তাকাতুম আকাশের দিকে।

 

     একদিন আমাদের দুই বাড়িতেই এল

            বাসা ভাঙবার পালা।

         এঞ্জিনিয়র শিবরামবাবু যাবেন পশ্চিমে

              কোন্‌ শহরে আলো - জ্বালার কারবারে।

         আমরা চলেছি কলকাতায় ;

       গ্রামের ইস্কুলটা নয় বাবার মনের মতো।

 

         চলে যাবার দুদিন আগে

      কনি এসে বললে, “ এস আমাদের বাগানে। ”

         আমি বললাম “কেন। ”

     কনি বললে, “ চুরি করব দুজনে মিলে ;

              আর তো পাব না এমন দিন। ”

         বললেম, “ কিন্তু তোমার বাবা—”

              কনি বললে, “ ভীতু। ”

            আমি বললেম মাথা বাঁকিয়ে,

                    “ একটুও না । ”

 

      শিবরামবাবুর শখের বাগান ফলে আছে ভরে।

         কনি শুধোল, “ কোন্‌ ফল ভালোবাস সব চেয়ে। ”

             আমি বললেম, “ ওই মজঃফরপুরের লিচু। ”