শ্যামলী

                 কনি বললে, “ গাছে চড়ে পাড়তে থাকো,

                         ধরে রইলেম ঝুড়ি। ”

                         ঝুড়ি প্রায় ভরেছে,

                হঠাৎ গর্জন উঠল “কে রে”—

                       স্বয়ং শিবরামবাবু।

         বললেন, “ আর কোনো বিদ্যা হবে না বাপু,

                  চুরি বিদ্যাই শেষ ভরসা। ”

         ঝুড়িটা নিয়ে গেলেন তিনি

                  পাছে ফলবান হয় পাপের চেষ্টা।

                          কনির দুই চোখ দিয়ে

                   মোটা মোটা ফোঁটায়

                        জল পড়তে লাগল নিঃশব্দে ;

            গাছের গুঁড়িতে ঠেস দিয়ে

                অমন অচঞ্চল কান্না

                   দেখি নি ওর কোনোদিন।

 

       তার পরে মাঝখানে অনেকখানি ফাঁক।

                  বিলেত থেকে ফিরে এসে দেখি

                    কনির হয়েছে বিয়ে।

              মাথায় উঠেছে লালপেড়ে আঁচল।

                             কপালে কুঙ্কুম,

                      শান্তগভীর চোখের দৃষ্টি,

                            স্বর হয়েছে গম্ভীর।

        আমি কলকাতায় রসায়নের কারখানায়

                          ওষুধ বানিয়ে থাকি।

       আমার দিনের পর দিন চলেছে

                         কর্মচক্রের স্নেহহীন কর্কশধ্বনিতে।

                    একদিন কনির কাছ থেকে চিঠিতে এল

                         দেখা করতে অনুনয়।

               গ্রামের বাড়িতে ভাগনির বিয়ে,

                      স্বামী পায় নি ছুটি,

                          ও একা এসেছে মায়ের কাছে।