সোনার তরী

সংসার-মাঝে   দু-একটি সুর

রেখে দিয়ে যাব করিয়া মধুর,

দু-একটি কাঁটা করি দিব দূর —

         তার পরে ছুটি নিব।

সুখহাসি আরো হবে উজ্জ্বল,

সুন্দর হবে নয়নের জল,

স্নেহসুধামাখা বাসগৃহতল

         আরো আপনার হবে।

প্রেয়সী নারীর নয়নে অধরে

আরেকটু মধু দিয়ে যাব ভরে,

আরেকটু স্নেহ শিশুমুখ- ' পরে

         শিশিরের মতো রবে।

না পারে বুঝাতে, আপনি না বুঝে,

মানুষ ফিরিছে কথা খুঁজে খুঁজে,

কোকিল যেমন পঞ্চমে কূজে

         মাগিছে তেমনি সুর —

কিছু ঘুচাইব সেই ব্যাকুলতা,

কিছু মিটাইব প্রকাশের ব্যথা,

বিদায়ের আগে দু-চারিটা কথা

         রেখে যাব সুমধুর।

থাকো হৃদাসনে জননী ভারতী —

তোমারি চরণে প্রাণের আরতি,

চাহি না চাহিতে আর কারো প্রতি,

         রাখি না কাহারো আশা।

কত সুখ ছিল, হয়ে গেছে দুখ ;

কত বান্ধব হয়েছে বিমুখ

  ম্লান হয়ে গেছে কত উৎসুক

         উন্মুখ ভালোবাসা।

শুধু ও-চরণ হৃদয়ে বিরাজে,

শুধু ওই বীণা চিরদিন বাজে,

স্নেহসুরে ডাকে অন্তর-মাঝে —

         আয় রে বৎস, আয়,