পুরস্কার

সেদিন বরষা ঝরঝর ঝরে,

    কহিল কবির স্ত্রী —

‘ রাশি রাশি মিল করিয়াছ জড়ো,

রচিতেছ বসি পুঁথি বড়ো বড়ো,

মাথার উপরে বাড়ি পড়ো-পড়ো

    তার খোঁজ রাখ কি!

গাঁথিছ ছন্দ দীর্ঘ হ্রস্ব —

মাথা ও মুণ্ড, ছাই ও ভস্ম ;

মিলিবে কি তাহে হস্তী অশ্ব,

    না মিলে শস্যকণা।

অন্ন জোটে না, কথা জোটে মেলা,

নিশিদিন ধরে এ কী ছেলেখেলা!

ভারতীরে ছাড়ি ধরো এইবেলা

      লক্ষ্মীর উপাসনা

ওগো ফেলে দাও পুঁথি ও লেখনী,

যা করিতে হয় করহ এখনি।

এত শিখিয়াছ, এটুকু শেখ নি

    কিসে কড়ি আসে দুটো! '

দেখি সে মুরতি সর্বনাশিয়া

কবির পরান উঠিল ত্রাসিয়া,

পরিহাসছলে ঈষৎ হাসিয়া

    কহে জুড়ি করপুট —

‘ ভয় নাহি করি ও মুখ-নাড়ারে,

লক্ষ্মী সদয় লক্ষ্মীছাড়ারে,

ঘরেতে আছেন নাইকো ভাঁড়ারে

    এ কথা শুনিবে কে বা!

আমার কপালে বিপরীত ফল,

চপলা লক্ষ্মী মোরে অচপল,  

   ভারতী না থাকে থির এক পল

       এত করি তাঁর সেবা॥