সোনার তরী

সকল কামনা করিয়া পূর্ণ

সকল দম্ভ করিয়া চূর্ণ

পাঁচ ভাই গিয়া বসিলা শূন্য

         স্বর্ণসিংহাসনে।

স্তব্ধ প্রাসাদ বিষাদ-আঁধার,

শ্মশান হইতে আসে হাহাকার —

রাজপুরবধূ যত অনাথার

         মর্মবিদার রব।

‘ জয় জয় জয় পাণ্ডুতনয় '

সারি সারি দ্বারী দাঁড়াইয়া কয় ;

পরিহাস ব ' লে আজি মনে হয়,

         মিছে মনে হয় সব।

কালি যে ভারত সারাদিন ধরি

অট্ট গরজে অম্বর ভরি

রাজার রক্তে খেলেছিল হোরি

         ছাড়ি কুলভয়লাজে,

পরদিনে চিতাভস্ম মাখিয়া

সন্ন্যাসীবেশে অঙ্গ ঢাকিয়া

বসি একাকিনী শোকার্তহিয়া

         শূন্য শ্মশানমাঝে।

কুরুপাণ্ডব মুছে গেছে সব,

সে রণরঙ্গ হয়েছে নীরব,

সে চিতাবহ্নি অতি ভৈরব

         ভস্মও নাহি তার ;

যে ভূমি লইয়া এত হানাহানি

সে আজি কাহার তাহাও না জানি —

কোথা ছিল রাজা, কোথা রাজধানী

          চিহ্ন নাহিকো আর।

তবু কোথা হতে আসিছে সে স্বর —

যেন সে অমর সমর-সাগর

গ্রহণ করেছে নব কলেবর

         একটি বিরাট গানে ;