প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
রামমোহন। যুবরাজ ডেকে পাঠিয়েছেন— বিশেষ কথা আছে।
রামচন্দ্র। আচ্ছা, তোমরা গান করো, আমি আসছি। রমাইয়ের কী হল জান? এখনও সে এলো না কেন?
প্রতাপাদিত্য। দেখো লছমন, আজ রাত্রে আমি রামচন্দ্র রায়ের ছিন্ন মুণ্ডু দেখতে চাই।
লছমন। ( সেলাম করিয়া) যো হুকুম মহারাজ!
রাজশ্যালকের প্রবেশ
রাজশ্যালক। ( পদতলে পড়িয়া) মহারাজ, মার্জনা করুন, বিভার কথা একবার মনে করুন। অমন কাজ করবেন না।
প্রতাপাদিত্য। কী মুশকিল! আজ রাত্রে এরা আমাকে ঘুমোতে দেবে না নাকি।
পাশ ফিরিয়া শয়ন
রাজশ্যালক। মহারাজ, রাজজামাতা এখন অন্তঃপুরে আছেন। তাঁকে মার্জনা করুন। লছমনকে সেখানে যেতে নিষেধ করুন। তাতে আপনার অন্তঃপুরের অবমাননা হবে।
প্রতাপাদিত্য। এখন আমার ঘুমোবার সময়। কাল সকালে তোমাদের দরবার শোনা যাবে। তুমি বলছ রাজজামাতা এখন অন্তঃপুরে। আচ্ছা, লছমন।
লছমন। মহারাজ।
প্রতাপাদিত্য। কাল সকালে রামচন্দ্র যখন শয়নঘর হতে বাহিরে আসবে তখন আমার আদেশ পালন করবে। এখন সব যাও— আমার ঘুমের ব্যাঘাত করো না।
[ লছমন ও রাজশ্যালকের প্রস্থান
বসন্ত রায়ের প্রবেশ
বসন্ত রায়। প্রতাপ! (প্রতাপাদিত্য নিরুত্তরে নিদ্রার ভান করিয়া রহিলেন) বাবা প্রতাপ। ( প্রতাপাদিত্য নিরুত্তর) বাবা প্রতাপ, এও কি সম্ভব?
প্রতাপাদিত্য। ( দ্রুত বিছানায় উঠিয়া বসিয়া) কেন সম্ভব নয়?
বসন্ত রায়। ছেলেমানুষ, অপরিণামদর্শী, সে কি তোমার ক্রোধের যোগ্য পাত্র?
প্রতাপাদিত্য। ছেলেমানুষ! আগুনে হাত দিলে হাত পুড়ে যায় এ বোঝবার বয়স তার হয় নি? ছেলেমানুষ! কোথাকার একটা লক্ষ্মীছাড়া মূর্খ ব্রাহ্মণ, নির্বোধদের কাছে দাঁত দেখিয়ে যে রোজকার করে খায়, তাকে স্ত্রীলোক সাজিয়ে, আমার মহিষীর সঙ্গে বিদ্রূপ করবার জন্যে এনেছে— এতটা বুদ্ধি যার জোগাতে পারে, তার ফল কী হতে পারে সে-বুদ্ধিটা আর তার মাথায় জোগাল না! দুঃখ এই, বুদ্ধিটা যখন মাথায় জোগাবে, তখন তার মাথাও শরীরে থাকবে না।
বসন্ত রায়। আহা, সে ছেলেমানুষ। সে কিছুই বোঝে না।