বিসর্জন

আনিব না এ স্নেহের 'পরে।

রঘুপতি। ভালো ভালো,

সে কথা হইবে পরে — কল্য হবে স্থির।

[উভয়ের প্রস্থান

চাঁদপাল ও গোবিন্দমাণিক্যের প্রবেশ

 

চাঁদপাল।    মহারাজ, সাবধানে থেকো। চারি দিকে

চক্ষুকর্ণ পেতে আছি, রাজ-ইষ্টানিষ্ট

কিছু না এড়ায় মোর কাছে। মহারাজ,

তব প্রাণহত্যা-তরে গুপ্ত আলোচনা

স্বকর্ণে শুনেছি।

গোবিন্দ।    প্রাণহত্যা! কে করিবে?

চাঁদপাল।    বলিতে সংকোচ মানি। ভয় হয়, পাছে

সত্যকার ছুরি চেয়ে নিষ্ঠুর সংবাদ

অধিক আঘাত করে রাজার হৃদয়ে।

গোবিন্দ।    অসংকোচে বলে যাও। রাজার হৃদয়

সতত প্রস্তুত থাকে আঘাত সহিতে।

কে করেছে হেন পরামর্শ।

চাঁদপাল।    যুবরাজ

নক্ষত্ররায়।

গোবিন্দ।     নক্ষত্র!

চাঁদপাল।    স্বকর্ণে শুনেছি

মহারাজ, রঘুপতি যুবরাজে মিলে

গোপনে মন্দিরে বসে স্থির হয়ে গেছে

সব কথা।

গোবিন্দ।     দুই দণ্ডে স্থির হয়ে গেল

আজন্মের বন্ধন টুটিতে! হায় বিধি!

চাঁদপাল।    দেবতার কাছে তব রক্ত এনে দেবে —

গোবিন্দ।     দেবতার কাছে! তবে আর নক্ষত্রের

নাই দোষ। জানিয়াছি, দেবতার নামে

মনুষ্যত্ব হারায় মানুষ। ভয় নাই,

যাও তুমি কাজে। সাবধানে রব আমি।

[চাঁদপালের প্রস্থান