বিসর্জন
চতুর্থ দৃশ্য

মন্দির। বাহিরে ঝড়

 

রঘুপতি

 

পুজোপকরণ লইয়া

 

রঘুপতি।    এতদিনে আজ বুঝি জাগিয়াছ দেবী!

ওই রোষহুহুংকার! অভিশাপ হাঁকি

নগরের 'পর দিয়ে ধেয়ে চলিয়াছ।

তিমিররূপিণী! — ওই বুঝি তোর

প্রলয়সঙ্গিনীগণ দারুণ ক্ষুধায়

প্রাণপণে নাড়া দেয় বিশ্বমহাতরু!

আজ মিটাইব তোর দীর্ঘ উপবাস।

ভক্তেরে সংশয়ে ফেলি এতদিন ছিলি

কোথা দেবী? তোর খড়্গ তুই না তুলিলে

আমরা কি পারি? আজ কী আনন্দ তোর

চণ্ডীমূর্তি দেখে! সাহসে ভরেছে চিত্ত,

সংশয় গিয়েছে, হতমান নতশির

উঠেছে নূতন তেজে। ওই পদধ্বনি

শুনা যায়, ওই আসে তোর পূজা!

জয় মহাদেবী! ....

জয়সিংহ যদি নাই আসে! কভু নহে।

সত্যভঙ্গ কভু নাহি হবে তার — জয়

মহাকালী, সিদ্ধিদাত্রী, জয় ভয়ংকরী! —

যদি বাধা পায় — যদি ধরা পড়ে শেষে —

যদি প্রাণ যায় তার প্রহরীর হাতে —

জয় মা অভয়া, জয় ভক্তের সহায়!

জয় মা জাগ্রত দেবী, জয় সর্বজয়া!

ভক্তবৎ সলার যেন দুর্নাম না রটে

এ সংসারে, শত্রুপক্ষ নাহি হাসে যেন

নিঃশঙ্ক কৌতুকে। মাতৃ-অহংকার যদি

চূর্ণ হয় সন্তানের, মা বলিয়া তবে