বিসর্জন

কেহ ডাকিবে না তোরে। ওই পদধ্বনি!

জয়সিংহ বটে! জয় নৃমুণ্ডমালিনী,

পাষণ্ডদলনী মহাশক্তি!

জয়সিংহের দ্রুত প্রবেশ

জয়সিংহ,

রাজরক্ত কই?

জয়সিংহ।    আছে আছে। ছাড়ো মোরে।

নিজে আমি করি নিবেদন। — রাজরক্ত

চাই তোর, দয়াময়ী, জগৎ পালিনী

মাতা? নহিলে কিছুতে তোর মিটিবে না

তৃষা! আমি রাজপুত, পূর্বপিতামহ

ছিল রাজা, এখনো রাজত্ব করে মোর

মাতামহবংশ — রাজরক্ত আছে দেহে।

এই রক্ত দিব। এই যেন শেষ রক্ত

হয় মাতা, এই রক্তে শেষ মিটে যেন

অনন্ত পিপাসা তোর, রক্ততৃষাতুরা!

 

বক্ষে ছুরি-বিন্ধন

 

রঘুপতি।    জয়সিংহ! জয়সিংহ! নির্দয়! নিষ্ঠুর!

এ কী সর্বনাশ করিলি রে! জয়সিংহ,

অকৃতজ্ঞ, গুরুদ্রোহী, পিতৃমর্মঘাতী,

স্বেচ্ছাচারী! জয়সিংহ, কুলিশকঠিন!

ওরে জয়সিংহ, মোর একমাত্র প্রাণ,

প্রাণাধিক, জীবন-মন্থন-করা ধন!

জয়সিংহ, বৎ স মোর, হে গুরুবৎ সল!

ফিরে আয়, ফিরে আয়, তোরে ছাড়া আর

কিছু নাহি চাহি! অহংকার অভিমান

দেবতা ব্রাহ্মণ সব যাক! তুই আয়!

 

প্রতিমার পদতলে মাথা রাখিয়া

 

ফিরে দে, ফিরে দে, ফিরে দে, ফিরে দে!