প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
বনমালীর প্রবেশ
বনমালী। ভালো আছেন শ্রীশবাবু? বিপিনবাবু ভালো তো? এই - যে পূর্ণবাবুও আছেন দেখছি। তা, বেশ হয়েছে। আমি অনেক ব'লে ক'য়ে সেই কুমারটুলির পাত্রী দুটিকে ঠেকিয়ে রেখেছি।
শ্রীশ। কিন্তু আমাদের আর ঠেকিয়ে রাখতে পারবেন না। আমরা একটা গুরুতর কিছু করে ফেলব।
পূর্ণ। আপনারা বসুন শ্রীশবাবু। আমার একটা কাজ আছে।
বিপিন। তার চেয়ে আপনি বসুন পূর্ণবাবু। আপনার কাজটা আমরা দুজনে মিলে সেরে দিয়ে আসছি।
পূর্ণ। তার চেয়ে তিন জনে মিলে সারাই তো ভালো।
বনমালী। আপনারা ব্যস্ত হচ্ছেন দেখছি। আচ্ছা, তা আর - এক সময় আসব।
চন্দ্রবাবু। নির্মল।
নির্মলা। কী মামা।
চন্দ্রবাবু। নির্মল, আমার গলার বোতামটা খুঁজে পাচ্ছি নে।
নির্মলা। বোধ হয় ঐখানেই কোথাও আছে।
চন্দ্রবাবু। ( নিশ্চিন্তভাবে ) একবার খুঁজে দেখো তো ফেনি।
নির্মলা। তুমি কোথায় কী ফেল আমি কি খুঁজে বের করতে পারি!
চন্দ্রবাবু। ( মনে একটুখানি সন্দেহের সঞ্চার হওয়ায়, স্নিগ্ধকণ্ঠে ) তুমিই তো পার নির্মল। আমার সমস্ত ত্রুটি সম্বন্ধে এত ধৈর্য আর কার আছে?
নির্মলার রুদ্ধ অভিমান চন্দ্রবাবুর সেনহস্বরে অকস্মাৎ অশ্রুজলে বিগলিত হইবার উপক্রম করিল —
নিঃশব্দে সম্বরণ করিবার চেষ্টা করিতে লাগিল। তাহাকে নিরুত্তর দেখিয়া চন্দ্রমাধববাবু নির্মলার কাছে
আসিলেন। নির্মলার মুখখানি দুই আঙুল দিয়া তুলিয়া ধরিয়া ক্ষণকাল দেখিলেন
( মৃদুহাস্যে ) নির্মল আকাশে একটুখানি মালিন্য দেখছি যেন। কী হয়েছে বলো দেখি।
নির্মলা। ( ক্ষুব্ধস্বরে ) এতদিন পরে আমাকে তোমাদের চিরকুমার - সভা থেকে বিদায় দিচ্ছ কেন। আমি কী করেছি।
চন্দ্রবাবু। ( আশ্চর্য হইয়া ) চিরকুমার - সভা থেকে তোমাকে বিদায়? তোমার সঙ্গে সে সভার যোগ কী।
নির্মলা। দরজার আড়ালে থাকলে বুঝি যোগ থাকে না? অন্তত সেই যতটুকু যোগ তাই বা কেন যাবে।
চন্দ্রবাবু। নির্মল, তুমি তো এ সভার কাজ করবে না, যারা কাজ করবে তাদের সুবিধার প্রতি লক্ষ রেখেই —
নির্মলা। আমি কেন কাজ করব না। তোমার ভাগ্নে না হয়ে ভাগ্নী হয়ে জন্মেছি বলেই কি তোমাদের হিতকার্যে যোগ দিতে