যোগাযোগ

কুমুদিনী। না, আমি চাই নে।

মধুসূদন। কেন?

কুমুদিনী। তা আমি বলতে পারি নে।

মধুসূদন। বলতে পার না? আবার তোমার সেই নুরনগরী চাল!

কুমুদিনী। আমি নুরনগরেরই মেয়ে।

মধুসূদন। যাও, তাদেরই কাছে যাও। যোগ্য নও তুমি এখানকার। অনুগ্রহ করেছিলেম, মর্যাদা বুঝলে না। এখন অনুতাপ করতে হবে। কাঠ হয়ে বসে রইলে যে!

 

ঝাঁকানি দিয়ে

 

মাপ চাইতেও জান না?

কুমুদিনী। কিসের জন্যে?

মধুসূদন। তুমি যে আমার এই বিছানা[য় ] শুতে পেরেছ সেই অযোগ্যতার জন্যে? রোসো, একটু দাঁড়াও। আমি বলে দিচ্ছি, কালই তোমাকে যেতেই হবে তোমার দাদার ওখানে, কিংবা যেখানে খুশি। ভেবে রেখেছ তোমাকে নইলে আমার চলবে না। এতদিন চলেছিল, আজও চলবে, ভালোই চলবে। যাও তবে, তোমার ওই ফরাসখানার ঘর পড়ে আছে, যাও ওখানে শুতে।

[ কুমুদিনীর প্রস্থান

 

যাক গে।

 

শ্যামাসুন্দরীর আবির্ভাব

 

কে, শ্যামা? কী করছ শ্যামা? কী চাই তোমার? আমায় কিছু বলবে? চলো, যাচ্ছি।

শ্যামাসুন্দরী। ঠাকুরপো, আমায় মেরে ফেলো তুমি। আর সইছে না-

মধুসূদন। ঈস্‌! তোমার গা যে একেবারে ঠাণ্ডা হিম। চলো, চলো, হিমে নয়। চলো আমার ঘরে।

 

নিজের শালের এক অংশে শ্যামাকে আবৃত করে চলে

গেল। সেই মুহূর্তে মোতির মা এবং নবীনের প্রবেশ

 

মোতির মা। না, এ আমি কিছুতেই সইব না। আমি বাধা দেব।

নবীন। তাতে আরো অনর্থ বাড়বে মেজোবউ। বাধা দিতে পারবে না।

মোতির মা। ভগবান কি তবে এও চোখ মেলে দেখবেন? এমন নীচের হাতে অপমান দিদির কপালে ছিল?