যোগাযোগ

মধুসূদন আংটি তিনটি পরালে

 

আর কিছু হুকুম আছে?

মধুসূদন। বড়োবউ, রাগ করছ কেন?

কুমুদিনী। আমি একটুও রাগ করছি নে।

মধুসূদন। আহা, যাও কোথা? শোনো, শোনো।

কুমুদিনী। কী বলো।

মধুসূদন। আচ্ছা, যাও। দাও, আংটিগুলো ফিরিয়ে দাও।

 

কুমুদিনী তাই করিল

যাও চলে। —

[ কুমুদিনীর প্রস্থান

নবীন!

নবীনের প্রবেশ

 

মধুসূদন। বড়োবউকে তোরা খেপিয়েছিস?

নবীন। দাদা, কালই তো আমরা যাচ্ছি। তোমার কাছে ভয়ে ভয়ে ঢোঁক গিলে আর কথা কব না। আমি আজ এই স্পষ্ট বলে যাচ্ছি — বউরানীকে খেপাবার জন্যে সংসারে আর কারও দরকার হবে না, তুমি একাই তা পারবে। আমরা থাকলে তবু যদি-বা কিছু ঠাণ্ডা রাখতে পারতুম, কিন্তু সে তো তোমার সইবে না।

মধুসূদন। জ্যাটামি করিস নে। রজবপুরে যাবার কথা তোরাই ওকে শিখিয়েছিস।

নবীন। এ কথা ভাবতেই পারি নে তো শেখাব কী?

মধুসূদন। দেখ্‌, এই নিয়ে যদি ওকে নাচাস, তোদের ভালো হবে না বলে দিচ্ছি।

নবীন। দাদা, এ-সব কথা বলছ কাকে? যেখানে বললে কাজে লাগে সেখানে বলো গে।

মধুসূদন। তোরা কিছু বলিস নি?

নবীন। এই তোমার গা ছুঁয়ে বলছি, কল্পনাও করি নি।

মধুসূদন। বড়োবউ যদি এখন জেদ ধ'রে বসে, কী করবি তোরা?

নবীন। তোমাকে ডেকে আনব। তোমার পাইক বরকন্দাজ পেয়াদা আছে, তুমি ঠেকাতে পারবে। তার পরে যুদ্ধের সংবাদ কাগজে রটলে মেজোবউকে সন্দেহ কোরো না।

মধুসূদন। চুপ কর্। বড়োবউ যদি রজবপুরে যেতে চায় তো যাক। আমি কিছু বলব না।

নবীন। আমরা তাঁকে খাওয়াব কী করে?

মধুসূদন। তোমার স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে। যা, যা বলছি, বেরো ঘর থেকে।

[ প্রস্থান