প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
মোতির মা। তবে ওই ঘরে আমার বিছানাও আমি করি, তোমার কাছেই আমি শোব।
কুমুদিনী। না।
মোতির মা। তোমার পণ টলাতে পারি এমন শক্তি আমার নেই। দরজাটা ভেজিয়ে রেখে যাই। লোকজনরা দেখলে কী বলবে? আমার কাজ সেরে এখনি আসছি।
[ দরজা ভেজিয়ে দিয়ে মোতির মার প্রস্থান
শ্যামাসুন্দরী প্রবেশ করে দরজা একটু ফাঁক করে উঁকি মেরে
দেখেই দরজা বন্ধ করলে। মধুসূদনের প্রবেশ
মধুসূদন। কী করছ তুমি?
শ্যামাসুন্দরী। কাল যে আমার ব্রত, ব্রাহ্মণভোজন করাতে হবে, জোগাড় করতে যাচ্ছি। তোমারও নেমন্তন্ন রইল।
মধুসূদন। দক্ষিণের জোগাড় রেখো।
শ্যামাসুন্দরী। তোমার দয়া হলেই জোগাড়ের ত্রুটি হবে না। কিন্তু ঠাকুরপো, অসময়ে তুমি এই বারান্দায় ঘুরে বেড়াচ্ছ কেন?
মধুসূদন। ঘরে গরম, এখানে হাওয়া খেতে এসেছি।
শ্যামাসুন্দরী। হাওয়া খাচ্ছ, না খাবি খাচ্ছ! পলাতকার সন্ধান করতে করতেই যাবে তোমার দিন।
মধুসূদন। তুমি জান বড়োবউ আছে কোথায়?
শ্যামাসুন্দরী। হারাধনের খোঁজ করে দিই যদি তবে কী বকশিশ দেবে?
মধুসূদন। বিরক্ত কোরো না বলছি, যদি জানা থাকে তো বলো।
শ্যামাসুন্দরী। সাধে বলতে চাই নে, বললে তোমার মাথা আরো গরম হয়ে উঠবে। রাজরানীর শখ হয়েছে গোলামি করতে। তুমি তার মান ভাঙাতে পারলে না, সে তোমার মান ভাঙবে হাটের মধ্যে।
মধুসূদন। ভালো লাগছে না তোমার এ-সব বানিয়ে কথা বলা।
শ্যামাসুন্দরী। যা ভালো লাগবে তাই তোমাকে দেখিয়ে দিই, তার একটুও বানানো নয়। আজ রাত্রের মতো ঘুমের দফা নিকেশ হবে। এই দেখো —
[ ইঙ্গিতে দেখিয়ে দিয়ে শ্যামাসুন্দরীর প্রস্থান
মধুসূদন। একি এ! কুমু, বেরিয়ে এসো বলছি।
বেরিয়ে এসে
কুমুদিনী। কী চাও?
মধুসূদন। এ কিসের পালা শুরু করেছ আমার বাড়িতে?
কুমুদিনী। তোমার বাড়িতে রানীর পালার অপমান ভোলবার জন্যেই আমার এই দাসীর পালা।
মধুসূদন। থিয়েটরি শুরু করলে নাকি?
কুমুদিনী। এখানে সত্যি যদি থাকে কিছু, সে এই দাসীর কাজ, রানীর কাজটাই ছিল থিয়েটরি।