মানসী
কোথা পথ কোথা নাই,        কোথা যেতে কোথা যাই,
      কোথা হতে উঠে হাসি কোথা অশ্রুজল!

 

      অতৃপ্ত বাসনা প্রাণে লয়ে
            অবারিত প্রেমের ভবনে
যাহা পাই তাই তুলি,       খেলাই আপনা ভুলি—
      কী যে রাখি কী যে ফেলি বুঝিতে পারি নে।

 

      ক্রমে আসে আনন্দ-আলস
            কুসুমিত ছায়াতরুতলে—
জাগাই সরসীজল,                     ছিঁড়ি বসে ফুলদল,
      ধূলি সেও ভালো লাগে খেলাবার ছলে।

 

      অবশেষে সন্ধ্যা হয়ে আসে,
            শ্রান্তি আসে হৃদয় ব্যাপিয়া—
থেকে থেকে সন্ধ্যাবায়          করে ওঠে হায়-হায়,
      অরণ্য মর্মরি ওঠে কাঁপিয়া কাঁপিয়া।

 

মনে হয় একি সব ফাঁকি!
            এই বুঝি, আর কিছু নাই!
অথবা যে রত্ন-তরে             এসেছিনু আশা ক’রে
      অনেক লইতে গিয়ে হারাইনু তাই।

 

      সুখের কাননতলে বসি
            হৃদয়ের মাঝারে বেদনা—
নিরখি কোলের কাছে          মৃৎপিণ্ড পড়িয়া আছে,
      দেবতারে ভেঙে ভেঙে করেছি খেলনা।

 

      এরি মাঝে ক্লান্তি কেন আসে,
           উঠিবারে করি প্রাণপণ!
হাসিতে আসে না হাসি,    বাজাতে বাজে না বাঁশি,
      শরমে তুলিতে নারি নয়নে নয়ন।