মানসী
      তাই সেই আশার উল্লাসে
           মুখ তুলে চেয়েছিনু মুখে।
সুধাপাত্র লয়ে হাতে                 কিরণকিরীট মাথে
      তরুণ দেবতাসম দাঁড়ানু সম্মুখে।

 

      পত্রপুষ্প-গ্রহতারা-ভরা
            নীলাম্বরে মগ্ন চরাচর,
তুমি তারি মাঝখানে          কী মূর্তি আঁকিলে প্রাণে—
      কী ললাট, কী নয়ন, কী শান্ত অধর!

 

      সুগভীর কলধ্বনিময়
            এ বিশ্বের রহস্য অকূল,
মাঝে তুমি শতদল              ফুটেছিলে ঢলঢল—
      তীরে আমি দাঁড়াইয়া সৌরভে আকুল।

 

      পরিপূর্ণ পূর্ণিমার মাঝে
            ঊর্ধ্বমুখে চকোর যেমন
আকাশের ধারে যায়,              ছিঁড়িয়া দেখিতে চায়
      অগাধ-স্বপন ছাওয়া জ্যোৎস্না-আবরণ—

 

তেমনি সভয়ে প্রাণ মোর
           তুলিতে যাইত কত বার
একান্ত নিকটে গিয়ে             সমস্ত হৃদয় দিয়ে
      মধুর রহস্যময় সৌন্দর্য তোমার।

 

      হৃদয়ের কাছাকাছি সেই
            প্রেমের প্রথম আনাগোনা,
সেই হাতে হাতে ঠেকা,    সেই আধো চোখে দেখা,
      চুপিচুপি প্রাণের প্রথম জানাশোনা!

 

      অজানিত সকলি নূতন,
           অবশ চরণ টলমল!