ফাল্গুনী

কিছু হল, অনেক বাকি ;

ক্ষমা আমায় করবে না কি।

গান এসেছে, সুর আসে নাই

হল না যে শোনানো তাই,

সে-সুর আমার রইল ঢাকা

নয়নজলে নয়নজলে॥

ও ভাই, কে যেন গেল বোধ হচ্ছে।

আরে, গেল গেল গেল, এ ছাড়া আর তো কিছুই বোধ হচ্ছে না।

আমার গায়ের উপর কোন্‌ পথিকের কাপড় ঠেকে গেল।

নিয়ে চলো পথিক, নিয়ে চলো তোমার সঙ্গে, হাওয়া যেমন ফুলের গন্ধ নিয়ে যায়।

কাকে ধরে আনবার জন্যে বেরিয়েছিলুম, কিন্তু ধরা দেবার জন্যেই মন আকুল হল।

বাউলের প্রবেশ

এই যে আমাদের বাউল। আমাদের এ কোথায় এনেছ, এখানে সমস্ত পথিক-জগতের নিশ্বাস আমাদের গায়ে লাগছে — সমস্ত তারাগুলোর।

আমরা খেলাচ্ছলে বেরিয়েছিলুম কিন্তু খেলাটা যে কী তা ভুলেই গেছি।

আমরা তাকেই ধরতে বেরিয়েছিলুম পৃথিবীর মধ্যে যে বুড়ো।

রাস্তায় সবাই বললে সে ভয়ংকর। সে কেবলমাত্র একটা মুণ্ডু, একটা হাঁ, যৌবনের চাঁদকে গিলে খাবার জন্যেই তার একমাত্র লোভ।

কিন্তু ভয় ভেঙে গেছে। মনের ভিতর বলছে সে যদি আমাকে চায় তবে আমিও বসে থাকব না। ফুল যাচ্ছে, পাতা যাচ্ছে, নদীর জল যাচ্ছে — তার পিছন পিছন আমিও যাব।

ও ভাই বাউল, তোমার একতারাতে একটা সুর লাগাও। রাত কত হল কে জানে। হয়তো বা ভোর হয়ে এল।

বাউলের গান

সবাই যারে সব দিতেছে

তার কাছে সব দিয়ে ফেলি।

কবার আগে চাবার আগে

আপনি আমায় দেব মেলি।

নেবার বেলা হলেম ঋণী,

ভিড় করেছি, ভয় করি নি,

এখনো ভয় করব না রে,

দেবার খেলা এবার খেলি।

প্রভাত তারি সোনা নিয়ে