প্রজাপতির নির্বন্ধ
ঘরের মধ্যে হাতড়ে বেড়াচ্ছিলেন– ধরা পড়ে ভালোরকম জবাবদিহি করতে পারলে না, শেষকালে আমাকে নিয়ে পড়ল। তার খানিক বাদেই দেখি দ্বিতীয় ব্যক্তিটি গিয়ে ঘরের বইগুলি নিয়ে উলটে-পালটে নিরীক্ষণ করছে। তফাত থেকে দেখেই পালিয়ে এসেছি। বেশ মনের মতো করে চিঠিখানি যে লিখব এরা তা আর দিলে না। আহা, চমৎকার জ্যোৎস্না হয়েছে।

শ্রীশ। এই-যে অক্ষয়বাবু!

অক্ষয়। ঐ রে! একটা ডাকাত ঘরের মধ্যে, আর-একটা ডাকাত গলির মোড়ে। হা প্রিয়ে, তোমার ধ্যান থেকে যারা আমার মনকে বিক্ষিপ্ত করছে তারা মেনকা উর্বশী রম্ভা হলে আমার কোনো খেদ ছিল না– মনের মতো ধ্যান-ভঙ্গও অক্ষয়ের অদৃষ্টে নেই– কলিকালে ইন্দ্রদেবের বয়স বেশি হয়ে বেরসিক হয়ে উঠেছে!


বিপিনের প্রবেশ

বিপিন। এই-যে অক্ষয়বাবু, আপনাকেই খুঁজছিলুম!

অক্ষয়। হায় হতভাগ্য, এমন রাত্রি কি আমাকে খোঁজ করে বেড়াবার জন্যই হয়েছিল?–
                                in such a night as this,
                        when the sweet wind did gently kiss the trees,
                        and they did make no noise, in such a night
                        Troilus methinks mounted the Troyan walls
                        and sighed his soul toward the Grecian tents,
                                where Cressid lay that night.

শ্রীশ। In such a night আপনি কী করতে বেরিয়েছেন অক্ষয়বাবু?

রসিক।         অপসরতি ন চক্ষুষো মৃগাক্ষী
                      রজনিরিয়ং চ ন যাতি নৈতি নিদ্রা।


                      চক্ষু-’পরে মৃগাক্ষীর চিত্রখানি ভাসে–
                      রজনীও নাহি যায়, নিদ্রাও না আসে।
অক্ষয়বাবুর অবস্থা আমি জানি মশায়!

অক্ষয়। তুমি কে হে?

রসিক। আমি রসিকচন্দ্র– দুই দিকে দুই যুবককে আশ্রয় করে যৌবনসাগরে ভাসমান।

অক্ষয়। এ বয়সে যৌবন সহ্য হবে না রসিকদাদা!

রসিক। যৌবনটা কোন্‌ বয়সে যে সহ্য হয় তা তো জানি নে, ওটা অসহ্য ব্যাপার। শ্রীশবাবু, আপনার কিরকম বোধ হচ্ছে।

শ্রীশ। এখনো সম্পূর্ণ বোধ করতে পারি নি।

রসিক। আমার মতো পরিণত বয়সের জন্যে অপেক্ষা করছেন বুঝি? অক্ষয়দা, আজ তোমাকে বড়ো অন্যমনস্ক দেখাচ্ছে।

অক্ষয়। তুমি তো অন্যমনস্ক দেখবেই, মনটা ঠিক তোমার দিকে নেই।– বিপিনবাবু, তুমি আমাকে খুঁজছিলে বললে বটে,