মালিনী
নিশ্চিন্ত রয়েছ মহারাজ? ভাব মনে
এ কন্যা তোমার কন্যা, সামান্য বালিকা!
ওগো, তাহা নহে। এ যে দীপ্ত অগ্নিশিখা।
আমি কহিলাম আজি শুনি লহো কথা—
এ কন্যা মানবী নহে, এ কোন্‌ দেবতা,
এসেছে তোমার ঘরে। করিয়ো না হেলা,
কোন্‌ দিন অকস্মাৎ ভেঙে দিয়ে খেলা
চলে যাবে— তখন করিবে হাহাকার,
রাজ্যধন সব দিয়ে পাইবে না আর।
মালিনী।    প্রজাদের পুরাও প্রার্থনা। মহাক্ষণ
এসেছে নিকটে। দাও মোরে নির্বাসন
পিতা।
রাজা।           কেন বৎসে, পিতার ভবনে তোর
কী অভাব? বাহিরের সংসার কঠোর
দয়াহীন, সে কি বাছা পিতৃমাতৃক্রোড়?
মালিনী।    শোনো পিতা— যারা চাহে নির্বাসন মোর
তারা চাহে মোরে। ওগো মা, শোন্‌ মা কথা—
বোঝাতে পারি নে মোর চিত্তব্যাকুলতা।
আমারে ছাড়িয়া দে মা, বিনা দুঃখশোকে,
শাখা হতে চ্যুত পত্রসম। সর্বলোকে
যাব আমি— রাজদ্বারে মোরে যাচিয়াছে
বাহির-সংসার। জানি না কী কাজ আছে,
আসিয়াছে মহাক্ষণ।
রাজা।                    ওরে শিশুমতি,
কী কথা বলিস।
মালিনী।                   পিতা, তুমি নরপতি,
রাজার কর্তব্য করো। জননী আমার,
আছে তোর পুত্রকন্যা এ ঘরসংসার,
আমারে ছাড়িয়া দে মা। বাঁধিস নে আর
স্নেহপাশে।
মহিষী।              শোনো কথা শোনো একবার।
বাক্য নাহি সরে মুখে, চেয়ে তোর পানে