মালিনী
দেশবিদেশের দৃষ্টিপথে? লজ্জাত্রাস
নাহি তার? আপনার ধর্ম আপনারি,
থাকে যেন সংগোপনে, সর্বনরনারী
দেখে যেন নাহি করে দ্বেষ, পরিহাস
না করে কঠোর। ধর্মেরে রাখিতে চাস
রাখ্ মনে মনে।
মহিষী। ভর্ৎসনা করিছ কেন
বাছারে আমার মহারাজ? কত যেন
অপরাধী। কী শিক্ষা শিখাতে এলে আজ,
পাপ রাষ্ট্রনীতি? লুকায়ে করিবে কাজ,
ধর্ম দিবে চাপা! সে মেয়ে আমার নয়।
সাধুসন্ন্যাসীর কাছে উপদেশ লয়,
শুনে পুণ্যকথা, করে সজ্জনের সেবা—
আমি তো বুঝি না তাহে দোষ দিবে কেবা,
ভয় বা কাহারে।
রাজা। মহারানী, প্রজাগণ
ক্ষুব্ধ অতিশয়। চাহে তারা নির্বাসন
মালিনীর।
মহিষী। কী বলিলে! নির্বাসন কারে!
মালিনীরে? মহারাজ, তোমার কন্যারে?
রাজা। ধর্মনাশ-আশঙ্কায় ব্রাহ্মণের দল
এক হয়ে—
মহিষী। ধর্ম জানে ব্রাহ্মণে কেবল?
আর ধর্ম নাই? তাদেরি পুঁথিতে লেখা
সর্বসত্য, অন্য কোথা নাহি তার রেখা
এ বিশ্বসংসারে? ব্রাহ্মণেরা কোথা আছে
ডেকে নিয়ে এসো। আমার মেয়ের কাছে
শিখে নিক ধর্ম কারে বলে। ফেলে দিক
কীটে-কাটা ধর্ম তার, ধিক্ ধিক্ ধিক্।—
ওরে বাছা, আমি লব নবমন্ত্র তোর,
আমি ছিন্ন করে দেব জীর্ণ শাস্ত্রডোর
ব্রাহ্মণের। তোমারে পাঠাবে নির্বাসনে?—