উৎসর্গ

প্রচুরপল্লবাকীর্ণ ঘন জটিলতা

হৃদয়ে বেষ্টিয়া ছিল, তারি শাখাজালে

তোমার চিন্তার ফুল আপনি ফুটালে

নিগূঢ় শিকড়ে তার বিন্দু বিন্দু সুধা

গোপনে সিঞ্চন করি। দিয়ে তৃষ্ণা - ক্ষুধা,

দিয়ে দণ্ড - পুরস্কার সুখ - দুঃখ - ভয়

নিয়ত টানিয়া কাছে দিয়েছ প্রশ্রয়।


রোগীর শিয়রে রাত্রে একা ছিনু জাগি

বাহিরে দাঁড়ানু এসে ক্ষণেকের লাগি।

শান্ত মৌন নগরীর সুপ্ত হর্ম্য - শিরে

হেরিনু জ্বলিছে তারা নিস্তব্ধ তিমিরে।

ভূত ভাবী বর্তমান একটি পলকে

মিলিল বিষাদস্নিগ্ধ আনন্দপুলকে

আমার অন্তরতলে ; অনির্বচনীয়

সে মুহূর্তে জীবনের যত - কিছু প্রিয়,

দুর্লভ বেদনা যত, যত গত সুখ,

অনুদ্‌গত অশ্রুবাষ্প, গীত মৌনমূক

আমার হৃদয়পাত্রে হয়ে রাশি রাশি

কী অনলে উজ্জ্বলিল। সৌরভে নিশ্বাসি

অপরূপ ধূপধূম উঠিল সুধীরে

তোমার নক্ষত্রদীপ্ত নিঃশব্দ মন্দিরে।


কাল যবে সন্ধ্যাকালে বন্ধুসভাতলে

গাহিতে তোমার গান কহিল সকলে

সহসা রুধিয়া গেল হৃদয়ের দ্বার —

যেথায় আসন তব, গোপন আগার।

স্থানভেদে তব গান — মূর্তি নব নব —

সখাসনে হাস্যোচ্ছ্বাস সেও গান তব,