উৎসর্গ

          সে যে কতকাল        এনু ঘুরে।

          কর্ণধার হে              কর্ণধার,

          বেচে কিনে লও        স্বর্ণভার।

বাজিয়াছে শাঁখ,                       পড়িয়াছে ডাক

          সে কোন্‌ অচেনা        রাজপুরে।


বিরহবৎসর - পরে মিলনের বীণা

তেমন উন্মাদ - মন্দ্রে কেন বাজিলি না।

কেন তোর সপ্তস্বর সপ্তস্বর্গপানে

ছুটিয়া গেল না ঊর্ধ্বে উদ্দাম - পরানে

বসন্তে - মানস - যাত্রী বলাকার মতো।

কেন তোর সর্ব তন্ত্র সবলে প্রহত

মিলিত ঝংকার - ভরে কাঁপিয়া কাঁদিয়া

আনন্দের আর্তরবে চিত্ত উন্মাদিয়া

উঠিল না বাজি। হতাশ্বাস মৃদুস্বরে

গুঞ্জরিয়া গুঞ্জরিয়া লাজে শঙ্কাভরে

কেন মৌন হল। তবে কি আমারি প্রিয়া

সে পরশ - নিপুণতা গিয়াছে ভুলিয়া।

তবে কি আমারি বীণা ধূলিচ্ছন্ন - তার

সেদিনের মতো করে বাজে নাকো আর।


অচির বসন্ত হায় এল, গেল চলে —

এবার কিছু কি, কবি করেছ সঞ্চয়।

ভরেছ কি কল্পনার কনক - অঞ্চলে

চঞ্চলপবনক্লিষ্ট শ্যাম কিশলয়,

ক্লান্ত করবীর গুচ্ছ। তপ্ত রৌদ্র হতে

নিয়েছ কি গলাইয়া যৌবনের সুরা —

ঢেলেছ কি উচ্ছলিত তব ছন্দঃস্রোতে,

রেখেছ কি করি তারে অনন্তমধুরা।