কড়ি ও কোমল

মার মায়া পায় নি কখনো,

       মা কেমন দেখিতে এসেছে।

তাই বুঝি আঁখি ছলছল,

     বাষ্পে ঢাকা নয়নের তারা!

চেয়ে যেন মার মুখ পানে

বালিকা কাতর অভিমানে

       বলে, ‘ মা গো এ কেমন ধারা।

এত বাঁশি, এত হাসিরাশি,

       এত তোর রতন - ভূষণ,

তুই যদি আমার জননী,

       মোর কেন মলিন বসন!'

 

 

ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েগুলি

ভাইবোন করি গলাগলি,

       অঙ্গনেতে নাচিতেছে ওই ;

বালিকা দুয়ারে হাত দিয়ে

তাদের হেরিছে দাঁড়াইয়ে,

ভাবিতেছে নিশ্বাস ফেলিয়ে —

       আমি তো ওদের কেহ নই।

স্নেহ ক ' রে আমার জননী

       পরায়ে তো দেয় নি বসন,

প্রভাতে কোলেতে করে নিয়ে

       মুছায়ে তো দেয় নি নয়ন।

আপনার ভাই নেই বলে

       ওরে কি রে ডাকিবে না কেহ?

আরো কারো জননী আসিয়া

       ওরে কি রে করিবে না স্নেহ?

ও কি শুধু দুয়ার ধরিয়া

       উৎসবের পানে রবে চেয়ে

       শূন্যমনা কাঙালিনী মেয়ে?