কথা

পথিক কহে, ‘ আমি বণিকজাতি,

     ডুবিয়া গেছে মোর তরী।

এখন দ্বারে দ্বারে হস্ত পাতি

     কেমনে রব প্রাণ ধরি!

করুণাপারাবার কোশলপতি

     শুনেছি নাম চারি ধারে ,

অনাথনাথ তিনি দীনের গতি,

     চলেছে দীন তাঁরি দ্বারে।’

শুনিয়া নৃপসুত ঈষৎ হেসে

     রুধিলা নয়নের বারি,

নীরবে ক্ষণকাল ভাবিয়া শেষে

     কহিলা নিশ্বাস ছাড়ি,

‘ পান্থ, যেথা তব বাসনা পুরে

     দেখায়ে দিব তারি পথ —

এসেছ বহু দুখে অনেক দূরে,

     সিদ্ধ হবে মনোরথ।’

 

 

বসিয়া কাশীরাজ সভার মাঝে ;

    দাঁড়ালো জটাধারী এসে।

‘ হেথায় আগমন কিসের কাজে’

    নৃপতি শুধাইল হেসে।

‘ কোশলরাজ আমি বনভবন’

    কহিলা বনবাসী ধীরে —

‘ আমার ধরা পেলে যা দিবে পণ

    দেহো তা মোর সাথিটিরে।’

উঠিল চমকিয়া সভার লোকে,

    নীরব হল গৃহতল ;

বর্ম - আবরিত দ্বারীর চোখে

    অশ্রু করে ছলছল।

মৌন রহি রাজা ক্ষণেকতরে

    হাসিয়া কহে, ‘ ওহে বন্দী,