প্রভাতসংগীত
ভাবের আনন্দে ভোর, গীতিকবি চারি মুখে
করিতে লাগিলা বেদগান।
আনন্দের আন্দোলনে ঘন ঘন বহে শ্বাস
অষ্ট নেত্রে বিস্ফুরিল জ্যোতি।
জ্যোতির্ময় জটাজাল
কোটিসূর্যপ্রভাসম,
দিগ্বিদিকে পড়িল ছড়ায়ে,
মহান্ ললাটে
তাঁর অযুত
তড়িতস্ফূর্তি
অবিরাম লাগিল খেলিতে।
অনন্ত ভাবের
দল,
হৃদয়-মাঝারে তাঁর
হতেছিল আকুল ব্যাকুল--
মুক্ত হয়ে ছুটিল তাহারা,
জগতের গঙ্গোত্রীশিখর হতে
শত শত স্রোতে
উচ্ছ্বসিল অগ্নিময় বিশ্বের নির্ঝর,
বাহিরিল অগ্নিময়ী বাণী,
উচ্ছ্বসিল বাষ্পময় ভাব।
উত্তরে দক্ষিণে গেল,
পুরবে পশ্চিমে গেল,
চারি দিকে ছুটিল তাহারা,
আকাশের মহাক্ষেত্রে শৈশব-উচ্ছ্বাস বেগে
নাচিতে লাগিল
মহোল্লাসে।
শব্দশূন্য
শূন্যমাঝে
সহসা সহস্র স্বরে
জয়ধ্বনি উঠিল উথলি,
হর্ষধ্বনি উঠিল ফুটিয়া,
স্তব্ধতার পাষাণহৃদয়
শত ভাগে গেল রে ফাটিয়া।
শব্দস্রোত ঝরিল চৌদিকে
এককালে সমস্বরে--
পুরবে উঠিল
ধ্বনি,
পশ্চিমে উঠিল ধ্বনি,
ব্যাপ্ত হল উত্তরে দক্ষিণে।
অসংখ্য ভাবের
দল খেলিতে
লাগিল যত
উঠিল খেলার কোলাহল।