পলাতকা

     স্নেহমায়া কিচ্ছু কি নেই ঘটে। ”

     বাপ বললেন, “ আমি পাষাণ বটে।

ধর্মের পথ কঠিন বড়ো, ননির পুতুল হলে

     এতদিনে কেঁদেই যেতেম গলে। ”

মা বললেন, “ হায় রে কপাল। বোঝাবই বা কারে।

              তোমার এ সংসারে

     ভরা ভোগের মধ্যখানে দুয়ার এঁটে

     পলে পলে শুকিয়ে মরবে ছাতি ফেটে

          একলা কেবল একটুকু ওই মেয়ে,

     ত্রিভুবনে অধর্ম আর নেই কিছু এর চেয়ে।

তোমার পুঁথির শুকনো পাতায় নেই তো কোথাও প্রাণ,

দরদ কোথায় বাজে সেটা অন্তর্যামী জানেন ভগবান। ”

 

     বাপ একটু হাসল কেবল, ভাবলে, “ মেয়েমানুষ

          হৃদয়তাপের ভাপে-ভরা ফানুস।

     জীবন একটা কঠিন সাধন — নেই সে ওদের জ্ঞান। ”

এই বলে ফের চলল পড়া ইংরেজি সেই প্রেমের উপাখ্যান।

দুখের তাপে জ্বলে জ্বলে অবশেষে নিবল মায়ের তাপ ;

                সংসারেতে একা পড়লেন বাপ।

          বড়ো ছেলে বাস করে তার স্ত্রীপুত্রদের সাথে

                    বিদেশে পাটনাতে।

          দুই মেয়ে তার কেউ থাকে না কাছে,

               শ্বশুরবাড়ি আছে।

             একটি থাকে ফরিদপুরে,

          আরেক মেয়ে থাকে আরো দূরে

          মাদ্রাজে কোন্‌ বিন্ধ্যগিরির পার।

     পড়ল মঞ্জুলিকার ‘ পরে বাপের সেবা - ভার।

     রাঁধুনে ব্রাহ্মণের হাতে খেতে করেন ঘৃণা,

                   স্ত্রীর রান্না বিনা

               অন্নপানে হত না তার রুচি।

সকালবেলায় ভাতের পালা, সন্ধ্যাবেলায় রুটি কিংবা লুচি ;

               ভাতের সঙ্গে মাছের ঘটা,