পরিশিষ্ট

দুয়ার মম পথপাশে,

সদাই তারে খুলে রাখি।

কখন তার রথ আসে

ব্যাকুল হয়ে জাগে আঁখি।

শ্রাবণ শুনি দূর মেঘে

লাগায় গুরু গরগর,

ফাগুন শুনি বায়ুবেগে

জাগায় মৃদু মরমর,

আমার বুকে উঠে জেগে

চমক তারি থাকি থাকি।

কখন তার রথ আসে

ব্যাকুল হয়ে জাগে আঁখি।

সবাই দেখি যায় চলে

পিছন-পানে নাহি চেয়ে

উতল রোলে কল্লোলে

পথের গান গেয়ে গেয়ে।

শরৎ-মেঘ ভেসে ভেসে

উধাও হয়ে যায় দূরে,

যেথায় সব পথ মেশে

গোপন কোন্‌ সুরপুরে–

স্বপনে ওড়ে কোন্‌ দেশে

উদাস মোর প্রাণ-পাখি।

কখন তার রথ আসে

ব্যাকুল হয়ে জাগে আঁখি।

এও তো আর-এক ছন্দ। ইহার লয় পাঁচে চারে মিলয়ে, আবার এইটেকে উলটাইয়া দিয়া চারে পাঁচে করিলে নয়ের ছন্দকে লইয়া নয়-ছয় করা যাইতে পারে। চৌতাল তো বারো মাত্রার ছন্দ। কিন্তু, এই বারো মাত্রা রক্ষা করিলেও চৌতালকে রক্ষা করা যায় না এমন হয়। এই তো বারো মাত্রা–

বনের পথে পথে বাজিছে বায়ে

নূপুর-রুনুঝুনু কাহার পায়ে।

কাটিয়া যায় বেলা মনের ভুলে,

বাতাস উদাসিছে আকুল চুলে,

ভ্রমরমুখরিত বকুলছায়ে

নূপুর-রুনুঝুনু কাহার পায়ে।