পরিশিষ্ট

পুলকে উঠে দুলে দুলে।

বেদনা সুমধুর হয়ে

ভুবনে গেল আজি বয়ে।

বাঁশিতে মায়া তান পুরি

কে আজি মন করে চুরি,

নিখিল তাই মরে ঘুরি

বিরহসাগরের কূলে।

এটা যে কী তাল তা আমি আনাড়ি জানি না। এবং কোনো ওস্তাদও জানেন না। গণিয়া দেখিলে দেখি প্রত্যেক লাইনে নয় মাত্রা। যদি এমন বলা যায় যে, নাহয় নয় মাত্রায় একটা নূতন তালের সৃষ্টি করা যাক, তবে আর-একটা নয় মাত্রার গান পরীক্ষা করিয়া দেখা যাক।

যে কাঁদনে হিয়া কাঁদিছে

সে কাঁদনে সেও কাঁদিল।

যে বাঁধনে মোরে বাঁধিছে

সে বাঁধনে তারে বাঁধিল।

পথে পথে তার খুঁজিনু

মনে মনে তারে পূজিনু,

সে পূজার মাঝে লুকায়ে

আমারেও সে যে সাধিল।

এসেছিল মন হরিতে

মহাপারাবার পারায়ে।

ফিরিল না আর তরীতে,

আপনারে গেল হারায়ে।

তারি আপনার মাধুরী

আপনারে করে চাতুরী,

ধরিবে কি ধরা দিবে সে

কী ভাবিয়া ফাঁদ ফাঁদিল।

এও নয় মাত্রা কিন্তু এর ছন্দ আলাদা। প্রথমটার লয় ছিল তিনে-ছয়ে, দ্বিতীয়টার লয় ছয়ে-তিনে। আরো একটা দেখা যাক।

আঁধার রজনী পোহাল,

জগৎ পুরিল পুলকে,

বিমল প্রভাতকিরণে

মিলিল দ্যুলোকে ভূলোকে।

নয় মাত্রা বটে, কিন্তু এ ছন্দ স্বতন্ত্র। ইহার লয় তিন তিন তিনে। ইহাকে কোন্ নাম দিবে? আরো একটা দেখা যাক।