ছন্দের মাত্রা
মাত্রার পরে যেমন স্পষ্ট যতি আছে, এই ছন্দের প্রথম দশ মাত্রার পরে তেমনি।
                   নয়নে   |   নি ঠু র   |   চাহনি   |
                             হৃদয়ে   |   করুণা   |   ঢাকা।
                   গভীর   |   প্রেমের   |   কাহিনী   |
                        গোপন   |   করিয়া   |   রাখা।
এরও পদের মাত্রা ১৭, কলার সংখ্যা ৬, শেষ কলাটি ছাড়া প্রত্যেক কলার মাত্রা ৩।
        ১           ২                 ৩               ৪
অন্তর তার   |   কী বলিতে চায়   |   চঞ্চল চর   |   ণে,
 কণ্ঠের হার   |   নয়ন ডুবায়   |   চম্পক বর   |   নে।
এরও সমগ্র পদের মাত্রা ১৭*। এর চারটি কলা। প্রথম তিনটি কলায় মাত্রাসংখ্যা ৬, চতুর্থ কলায় ১। সতেরো মাত্রার ছন্দকে কলাবৈচিত্র্যের দ্বারা আরো নবনব রূপ দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু সাক্ষী আর বাড়াবার দরকার নেই।

শেষের যে দৃষ্টান্ত দেওয়া গেছে তাতে মাত্রাসংখ্যাগণনা উপলক্ষ্যে ‘চরণে’ শব্দকে ভাগ করে দিয়ে এক মাত্রার ‘ণে’ ধ্বনিকে স্বতন্ত্র কলায় বসিয়েছি। ওটা যে স্বতন্ত্রকলাভুক্ত তার প্রমাণ এই ছন্দের তাল দেবার সময় ঐ ‘ণে’ ধ্বনিটির উপর তাল পড়ে।

ইতিপূর্বে অন্যত্র একটি নয় মাত্রার ছন্দের দৃষ্টান্ত দেবার সময় নিম্নলিখিত শ্লোকটি ব্যবহার করেছি। তাল দেবার রীতি বদল করে একে দুরকম করে পড়া যায়, দুটোই পৃথক্‌ ছন্দ।

বারে বারে যায় | চলিয়া

ভাসায় গো আঁখি | নীরে সে।

বিরহের ছলে | ছলিয়া

মিলনের লাগি | ফিরে সে।

এটা ৯ মাত্রার শ্রেণীর ছন্দ; এর দুই কলা এবং কলাগুলি ত্রৈমাত্রিক। এর পদকে তিন কলায় ভাগ করে কলাগুলিকে দুই মাত্রার ছাঁদ দিলে এই একই ছড়া সম্পূর্ণ নূতন ছন্দে গিয়ে পৌঁছাবে। যথা -
            ১         ২             ৩
বারে বারে   |   যায় চলি   |   য়া
             ভাসায় গো   |   আঁখিনীরে   |   সে।
বিরহের   |   ছলে ছলি   |   য়া
              মিলনের   |   লাগি ফিরে   |   সে।
সারাদিন   |   দহে তিয়া   |   ষা,
             বারেক না   | দেখি উহা   | রে।
অসময়ে   |   লয়ে কী আ   |   শা
             অকারণে   |   আসে দুয়া   |   রে।

* ১৯?