বিসর্জন

রঘুপতি।    রাজরক্ত চান দেবী।

নক্ষত্ররায়।    রাজরক্ত চান!

রঘুপতি।    রাজরক্ত আগে আনো, পরে রাজা হবে।

নক্ষত্ররায়।    পাব কোথা!

রঘুপতি।    ঘরে আছে গোবিন্দমাণিক্য।

তাঁরি রক্ত চাই।

নক্ষত্ররায়।    তাঁরি রক্ত চাই!

রঘুপতি।                                     স্থির

হয়ে থাকো জয়সিংহ, হোয়ো না চঞ্চল। —

বুঝেছ কি? শোনো তবে — গোপনে তাঁহারে

বধ ক'রে, আনিবে সে তপ্ত রাজরক্ত

দেবীর চরণে। —

জয়সিংহ, স্থির যদি

না থাকিতে পারো, চলে যাও অন্য ঠাঁই। —

বুঝেছ নক্ষত্ররায়? দেবীর আদেশ,

রাজরক্ত চাই — শ্রাবণের শেষ রাত্রে।

তোমরা রয়েছ দুই রাজভ্রাতা — জ্যেষ্ঠ

যদি অব্যাহতি পায়, তোমার শোণিত

আছে। তৃষিত হয়েছে যবে মহাকালী,

তখন সময় আর নাই বিচারের।

নক্ষত্ররায়।   সর্বনাশ! হে ঠাকুর, কাজ কী রাজত্বে!

রাজরক্ত থাক্‌ রাজদেহে, আমি যাহা

আছি সেই ভালো।

রঘুপতি।    মুক্তি নাই, মুক্তি নাই

কিছুতেই! রাজরক্ত আনিতেই হবে!

নক্ষত্ররায়।   বলে দাও, হে ঠাকুর, কী করিতে হবে।

রঘুপতি।    প্রস্তুত হইয়া থাকো। যখন যা বলি

অবিলম্বে করিবে সাধন ; কার্যসিদ্ধি

যতদিন নাহি হয়, বন্ধ রেখো মুখ।

এখন বিদায় হও।

নক্ষত্ররায়। হে মা কাত্যায়নী!

[প্রস্থান