যোগাযোগ

কুমুদিনী। সে হবে না, আমার দায় আমিই নেব। আমার চিঠি যদি কেউ চুরি করে রাখে তবে আমিই সেটা উদ্ধার করব।

মোতির মা। আমি জানি ওঁকে, ক্ষমা করবেন না।

কুমুদিনী। নিজের চিঠি নিজে চুরি করে পড়তে হল এর চেয়ে শাস্তি কী হতে পারে?

মোতির মা। কোন্‌টা নিজের কোন্‌টা নিজের নয় সে বিচার এ বাড়ির কর্তা করে দেন।

কুমুদিনী। আমি বিচারের অপেক্ষা করতে পারব না। দেখিয়ে দাও — ওই চিঠিখানির জন্যে বুকের পাঁজরগুলোর উপর মনটা মাথা খোঁড়াখুঁড়ি করে মরছে। কী দুঃখ বুঝতে পারছ না কি?

দেরাজ খুলে

মোতির মা। ওই তোমার চিঠি সক্কলের উপরে।

 

চিঠি তুলে নিয়ে

কুমুদিনী। এ তো আজকের তারিখের ছাপ নয়। আচ্ছা, তুমি যাও।

মোতির মা। থাকি-না তোমার কাছে?

কুমুদিনী। না, যাও।

মোতির মা। তা, চিঠিটা নিয়ে চলে এসো।

কুমুদিনী। এই ডেস্কেই রেখে যাব।

[ মোতির মার প্রস্থান

আমার চিঠি কেউ যদি চুরি করেন করুন, আমি তাই বলে চুরি করে চুরির শোধ দিতে চাই নে।

 

মধুসূদনের প্রবেশ

 

মধুসূদন। এ ঘরে তুমি যে!

কুমুদিনী। আমার নামে দাদার চিঠি এসেছে কি না দেখতে এসেছিলেম।

মধুসূদন। চিঠি তো আমিই তোমার কাছে নিয়ে যেতুম, সেজন্যে তোমার তো আসবার দরকার ছিল না।

কুমুদিনী। তোমারও নিয়ে যাবার দরকার নেই। এ চিঠি তুমি আমাকে পড়তে দিতে চাও নি — পড়ব না। এই ছিঁড়ে ফেললুম। কিন্তু এমন কষ্ট তুমি আমাকে আর কখনো দিয়ো না।

[ মুখে আঁচল চেপে ধরে দ্রুত প্রস্থান

সগর্জনে

মধুসূদন। নবীন!

 

নবীনের প্রবেশ