গোড়ায় গলদ
আসি।
[ প্রস্থান
নিবারণের প্রবেশ

শিবচরণ। আরে এসো ভাই, এসো।

নিবারণ। ভালো আছ ভাই? যা হোক শিবু, কথা তো স্থির?

শিবচরণ। সে তো বরাবরই স্থির আছে, এখন তোমার মর্জি হলেই হয়।

নিবারণ। আমারও তো সমস্ত ঠিক হয়ে আছে, এখন হয়ে গেলেই চুকে যায়।

শিবচরণ। তবে আর কী, দিনক্ষণ দেখে—

নিবারণ। সে সব কথা পরে হবে—এখন কিছু মিষ্টিমুখ করবে চলো।

শিবচরণ। না ভাই, এখন আমার খাওয়াটা অভ্যাস নেই, এখন থাক্‌—অসময়ে খেয়েছি কি, আর আমার মাথা ধরেছে—

নিবারণ। না না, সে হবে না, কিছু খেতে হচ্ছে। বাপু, তুমিও এসো।


তৃতীয় দৃশ্য
কমলমুখীর অন্তঃপুর
কমলমুখী ও ইন্দুমতী

কমলমুখী। ছি ছি, ইন্দু,তুই কী কাণ্ডটাই করলি বল্‌ দেখি।.

ইন্দুমতী। তা বেশ করেছি। ভাই, পরে গোল বাধার চেয়ে আগে গোল চুকে যাওয়া ভালো।

কমলমুখী। এখন পুরুষজাতটাকে কী রকম লাগছে।

ইন্দুমতী। মন্দ না ভাই, একরকম চলনসই।

কমলমুখী। তুই যে বলেছিলি ইন্দু, নিমাই গয়লাকে তুই কক্‌খনো বিয়ে করবি নে।

ইন্দুমতী। না ভাই, নিমাই নামটি খারাপ নয়, তা তোমরা যাই বল। তোমার নলিনীকান্ত, ললনামোহন, রমণীরঞ্জনের চেয়ে সহস্র গুণে ভালো। নিমাই নামটি খুব আদরের নাম, অথচ পুরুষমানুষকে বেশ মানায়। রাগ করিস নে দিদি, তোর বিনোদের চেয়ে ঢের ভালো—

কমলমুখী। কী হিসেবে ভালো শুনি।

ইন্দু্‌মতী। বিনোদবিহারী নামটা যেন টাটকা নভেল-নাটক থেকে পেড়ে এনেছে—বড্ডো বেশি গায়ে-পড়া কবিত্ব। মানুষের চেয়ে নামটা জাঁকালো। আর, নিমাই নামটি কেমন বেশ সাদাসিধে, কোনো দেমাক নেই, ভঙ্গিমে নেই—বেশ নিতান্ত আপনার লোকটির মতো।

কমলমুখী। কিন্তু যখন বই ছাপাবে, বইয়ে ও-নাম তো মানাবে না।

ইন্দুমতী। আমি তো ওঁকে ছাপতে দেব না, খাতাখানি আগে আটক করে রাখব। আমার ততটুকু বুদ্ধি আছে দিদি—

কমলমুখী। তা, যে নমুনা দেখিয়েছিলি।—তোর সেটুকু বুদ্ধি আছে জানি, কিন্তু শুনেছি বিয়ে করলে আবার স্বামীর লেখা