গোড়ায় গলদ

নিবারণ। ওদের দেখাশুনা হয় কী করে।

কমলমুখী। সে আমি সব ঠিক করেছি।

নিবারণ। তুমি কী করে ঠিক করলে মা।

কমলমুখী। আমি ওঁকে বলে দিয়েছি ওঁর সমস্ত বন্ধুকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতে। তা হলে সেইসঙ্গে ললিতবাবুও আসবেন, তার পর একটা কোনো উপায় বের করা যাবে।

নিবারণ। তা সব যেন হল, আমি ভাবছি শিবুকে কী বলব।

কমলমুখী। ঐ উনি আসছেন। আমি তবে যাই।

[প্রস্থান
বিনোদবিহারীর প্রবেশ

বিনোদবিহারী। এই যে, আমি এখনই আপনার ওখানেই যাচ্ছিলুম।

নিবারণ। কেন বাপু, আমার ওখানে তো তোমার কোনো মক্কেল নেই।

বিনোদবিহারী। আজ্ঞে, আমাকে আর লজ্জা দেবেন না—আপনি বুঝতেই পারছেন—

নিবারণ। না বাপু, আমি এখনকার কিছুই বুঝতে পারি নে— একটু পরিষ্কার করে খুলে না বললে তোমাদের কথাবার্তা রকমসকম আমার ভালোরূপ ধারণা হয় না।

বিনোদবিহারী। আমার স্ত্রী আপনার ওখানে আছেন—

নিবারণ। তা অবশ্য-তাঁকে তো আমরা ত্যাগ করতে পারি নে—

বিনোদবিহারী। আমার সমস্ত অপরাধ ক্ষমা করে তাঁকে যদি আমার ওখানে পাঠিয়ে দেন—

নিবারণ। বাপু, আবার কেন পালকিভাড়াটা লাগাবে।

বিনোদবিহারী। আপনারা আমাকে কিছু ভুল বুঝছেন। আমার অবস্থা খারাপ ছিল বলেই আমার স্ত্রীকে আপনার ওখানে পাঠিয়েছিলুম, নইলে তাঁকে ত্যাগ করবার অভিপ্রায় ছিল না। এখন আপনারই অনুগ্রহে আমার অবস্থা অনেকটা ভালো হয়েছে— এখন অনায়াসে—

নিবারণ। বাপু, এ তো তোমার পোষা পাখি নয়। সে যে সহজে তোমার ওখানে যেতে রাজি হবে এমন আমার বোধ হয় না।

বিনোদবিহারী। আপনি অনুমতি দিলে আমি নিজে গিয়ে তাঁকে অনুনয় বিনয় করে নিয়ে আসতে পারি।

নিবারণ। আচ্ছা, সে বিষয়ে বিবেচনা করে পরে বলব।

[ প্রস্থান

বিনোদবিহারী। বুড়োও তো কম একগুঁয়ে নয় দেখছি। যা হোক, এ পর্যন্ত রানীকে কিছু বলে নি বোধ হয়।


চন্দ্রকান্তের প্রবেশ

বিনোদবিহারী। কী হে চন্দর!

চন্দ্রকান্ত। আর ভাই, মহা বিপদে পড়েছি।

বিনোদবিহারী। কেন, কী হয়েছে।