গোড়ায় গলদ
নিয়ে যেন খুব খুব সুখে থাকে—যেন চিরজীবন আদরে সোহাগে কাটাতে পারে। (প্রসহানোদ্যম। পশ্চাতে ফিরিয়া নিমাইকে দেখিয়া) ও মা!
[ মুখ আচ্ছাদন

নিমাই। ঠাকরুন, আমি একখানা খাতা খুঁজতে এসেছিলুম—(ইন্দুমতীর দ্রুত পলায়ন) জন্ম জন্ম সহস্র বার আমার সহস্র খাতা হারাক—কবিতার বদলে যা পেয়েছি কালিদাস তাঁর কুমারমম্ভব শকুন্তলা বাঁধা রেখে এমন জিনিস পায় না।

[ মহা উল্লাসে প্রস্থান


তৃতীয় দৃশ্য
বিবাহসভা

লোকারণ্য। শঙ্খ হুলুধ্বনি। সানাই

নিবারণ। কানাই! ও কানাই! কী করি বলো দেখি। কানাই গেল কোথায়।

শিবচরণ। তুমি ব্যস্ত হোয়ো না ভাই। এ ব্যস্ত হবার কাজ নয়। আমি সমস্ত ঠিক করে দিচ্ছি। তুমি পাত পাড়া হল কিনা দেখে এস দেখি।

ভৃত্য। বাবু, আসন এসে পৌঁচেছে সেগুলো রাখি কোথায়।

নিবারণ। এসেছে! বাঁচা গেছে। তা সেগুলো ছাতে—

শিবচরণ। ব্যস্ত হচ্ছ কেন দাদা। কী হয়েছে বলো দেখি। কী রে বেটা, তুই হাঁ করে দাঁড়িয়ে রয়েছিস কেন। কাজকর্ম কিছু হাতে নেই না কি।

ভৃত্য। আসন এসেছে সেগুলো রাখি কোথায় তাই জিজ্ঞাসা করছি।

শিবচরণ। আমার মাথায়! একটু গুছিয়ে-গাছিয়ে নিজের বুদ্ধিতে কাজ করা,তা তোদের দ্বারা হবে না! চল্‌ আমি দেখিয়ে দিচ্ছি। ওরে বাতিগুলো যে এখনো জ্বালালে না! এখানে কোনো কাজেরই একটা বিধিব্যবস্থা নেই— সমস্ত বেবন্দোবস্ত! নিবারণ, তুমি ভাই একটু ঠাণ্ডা হয়ে বসো দেখি—ব্যস্ত হয়ে বেড়ালে কোনো কাজই হয় না। আঃ, বেটাদের কেবল ফাঁকি। বেহারা বেটারা সবাই পালিয়েছে দেখছি—আচ্ছা করে তাদের কানমলা না দিলে—

নিবারণ। পালিয়েছে নাকি! কী করা যায়!

শিবচরণ। ব্যস্ত হোয়ো না ভাই—সব ঠিক হয়ে যাবে। বড়ো বড়ো ক্রিয়াকর্মের সময় মাথা ঠান্ডা রাখা ভারি দরকার। কিন্তু এই রেধো বেটার সঙ্গে তো আর পারি নে! আমি তাকে পই পই করে বললুম, তুমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে লুচিগুলো ভাজিয়ো, কিন্তু কাল থেকে হতভাগা বেটার চুলের টিকি দেখবার জো নেই। লুচি যেন কিছু কম পড়েছে বোধ হচ্ছে।

নিবারণ। বল কী শিবু! তা হলে তো সর্বনাশ!

শিবচরণ। ভয় কী দাদা! তুমি নিশ্চিন্ত থাকো, সে আমি করে নিচ্ছি। এক বার রাধুর দেখা পেলে হয়, তাকে আচ্ছা করে শুনিয়ে দিতে হবে।

চন্দ্রকান্ত নিমাই প্রভৃতির প্রবেশ