তাসের দেশ

     কেমনে    কাটে যে দিন দিন গুনিয়ে।
কী মায়া দেয় বুলায়ে,        দিল সব কাজ ভুলায়ে,
         বেলা   যায় গানের সুরে জাল বুনিয়ে।

রুইতন। আচ্ছা, গরাবুমণ্ডলের জন্যে বিবিসুন্দরীদের খুঁজে বেড়াচ্ছি, তারাও কি তবে—

হরতনী। হাঁ, তারাও এইখানেই, নদীর ধারে ধারে, গাছের তলায় তলায়।

রুইতন। কী করছে।

হরতনী। সাজ বদল করছে, আমারই মতো। কেমন দেখাচ্ছে। পছন্দ হয়?

রুইতন। মনে হচ্ছে, পর্দা খুলে গেছে, চাঁদের থেকে মেঘ গেছে সরে, একেবারে নতুন মানুষ।

হরতনী। তোমাদের ছক্কা পঞ্জা আমাদের শাসাবার জন্যে এসেছিলেন, তাঁদের কী দশা হয়েছে দেখো গে যাও।

রুইতন। কেন। কী হল।

হরতনী। খ্যাপার মতো ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দীর্ঘনিশ্বাস ফেলছে, এমন-কি গুন্‌-গুন্‌ করে গানও করছে।

রুইতন। গান! ছক্কা-পঞ্জার গান!

হরতনী। সুরে না হোক, বেসুরে। আমি তখন চুল বাঁধছিলুম। থাকতে পারলুম না, চলে আসতে হল।

রুইতন। আশ্চর্য করলে। চুল বাঁধা!‌ এ বিদ্যে কে শেখালে।

হরতনী। কেউ না। ঐ দেখো-না, এবার হঠাৎ শুকনো ঝরনায় নামল বর্ষা। জলের ধারায় ধারায় শুরু হল বেণীবন্ধন। এ বিদ্যা কে শেখাল তাকে। চলো আমার সঙ্গে, ছক্কা-পঞ্জার গান শুনিয়ে দিই তোমাকে।

[প্রস্থান
বিবিদের প্রবেশ

বিবিরা।                                        নাচ ও গান

অজানা সুর কে দিয়ে যায় কানে কানে,

ভাবনা আমার যায় ভেসে যায় গানে গানে।

বিস্মৃত জন্মের ছায়ালোকে

হারিয়ে-যাওয়া বীণার শোকে

কেঁদে ফিরে পথহারা রাগিণী।

কোন্‌ বসন্তের মিলনরাতে তারার পানে

ভাবনা আমার যায় ভেসে যায় গানে গানে॥

[প্রস্থান