তাসের দেশ

গোলাম। কানমলা মোচড়ের আইন।

রাজা। বুঝেছি। রানীবিবি, তোমার কী মত। বাধ্যতামূলক আইন এবার তবে চালাই?

রানী। বাধ্যতামূলক আইন অন্দরমহলে আমরাও চালিয়ে থাকি— দেখব, কে দেয় কাকে নির্বাসন।

টেক্কাকুমারীরা। (সকলে) আমরা চালাব অবাধ্যতামূলক বে-আইন।

গোলাম। এ কী হল। হায় কৃষ্টি, হায় কৃষ্টি, হায় কৃষ্টি।

রাজা। সভা ভেঙে দিলুম। এখনি সবাই চলে এসো। আর এখানে থাকা নিরাপদ নয়।

[তাসের দলের প্রস্থান

সদাগর। ভাই সাঙাত, এখানে তো আর সহ্য হচ্ছে না। এরা যে বিধাতার ব্যঙ্গ। এদের মধ্যে প’ড়ে আমরা সুদ্ধ মাটি হয়ে যাব।

রাজপুত্র। ভিতরে ভিতরে কী ঘটছে, সেটা কি তোমার চোখে পড়ে না। পুতুলের মধ্যে প্রথম প্রাণের সঞ্চার কি অনুভব করছ না। আমি তো শেষ পর্যন্ত না দেখে যাচ্ছি নে।

সদাগর। কিন্তু, এ যে জীবন্মৃতের খাঁচা, নিয়মের জারকরসে জীর্ণ এদের মন।

রাজপুত্র। ঐ দিকে চোখ মেলে দেখো দেখি।

সদাগর। তাই তো, বন্ধু, লেগেছে সমুদ্রপারের মন্ত্র। ইস্কাবনের নহলা গাছের তলায় পা ছড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে, দেখছি এখানকার নিয়ম গেল উড়ে।

রাজপুত্র। চিঁড়েতনীর পায়ের শব্দ শুনছে আকাশ থেকে। এ সময়ে বোধ হয় আমাদের সঙ্গটা ওর পছন্দ হবে না। চলো, আমরা সরে যাই।

[ প্রস্থান


তৃতীয় দৃশ্য
প্রসাধনে রত ইস্কাবনী। টেক্কানীর প্রবেশ


টেক্কানী।

         গান
বলো,  সখী,  বলো তারি নাম
          আমার কানে কানে
যে-নাম বাজে তোমার বীণার তানে তানে।
      বসন্তবাতাসে বনবীথিকায়
           সে-নাম মিলে যাবে,
      বিরহী বিহঙ্গ-কলগীতিকায়
সে-নাম মদির হবে-যে বকুলঘ্রাণে।