বন-ফুল
অবসন্ন হোয়ে পঞ্চল যুবক তখনি,
     কমলার কোল হোতে পড়িল ধরায়!
উঠিয়া বিপিনবালা সবেগে অমনি
     ঊর্দ্ধহস্তে কহে উচ্চ সুদৃঢ় ভাষায়—

‘জলন্ত জগৎ! ওগো চন্দ্র সূর্য্য তারা!
     দেখিতেছ চিরকাল পৃথিবীর নরে!
পৃথিবীর পাপ পুণ্য, হিংসা, রক্তধারা
     তোমরাই লিখে রাখ জ্বলদ্‌ অক্ষরে!

সাক্ষী হও তোমরা গো করিও বিচার!—
     তোমরা হও গো সাক্ষী পৃথ্বী চরাচর!
বহে যাও!— বহে যাও যমুনার ধার,
     নিষ্ঠুর কাহিনী কহি সবার গোচর!

এখনই অস্তাচলে যেও না তপন!
     ফিরে এসো, ফিরে এসো তুমি দিনকর!
এই, এই রক্তধারা করিয়া শোষণ
     লয়ে যাও, লয়ে যাও স্বর্গের গোচর!

ধুস্‌ নে যমুনাজল! শোণিতের ধারে!
     বকুল তোমার ছায়া লও গো সরিয়ে!
গোপন করো না উহা নিশীথ!    আঁধারে!
     জগৎ!    দেখিয়া লও নয়ন ভরিয়ে!

অবাক হউক্‌ পৃথ্বী সভয়ে, বিস্ময়ে!
     অবাক হইয়া যাক্‌ আঁধার নরক!
পিশাচেরা লোমাঞ্চিত হউক সভয়ে!
     প্রকৃতি মুদুক ভয়ে নয়নপলক!

রক্তে লিপ্ত হয়ে যাক্‌ বিজয়ের মন!