বন-ফুল
নিবেছে দেহের জ্বালা হৃদয়-অনলে—
     ইহার অধিক আর নাইক মরণ!

বকুলের তলা হোক্‌ রক্তে রক্তময়!
     মৃত্তিকা রঞ্জিত হোক্‌ লোহিত বরণে!
বসিবে যখন কাল হেথায় বিজয়
     আচ্ছন্ন বন্ধুতা পুনঃ উদিবে না মনে?

মৃত্তিকার রক্তরাগ হোয়ে যাবে ক্ষয়—
     বিজয়ের হৃদয়ের শোণিতের দাগ
আর কি কখনো তার হবে অপচয়?
     অনুতাপ-অশ্রুজলে মুছিবে সে রাগ?

বন্ধুতার ক্ষীণ জ্যোতি প্রেমের কিরণে
     (রবিকরে হীনভাতি নক্ষত্র যেমন)
বিলুপ্ত হয়েছে কি রে বিজয়ের মনে?
     উদিত হইবে না কি আবার কখন?

একদিন অশ্রুজল ফেলিবে বিজয়!
     একদিন অভিশাপ দিবে ছুরিকারে!
একদিন মুছিবারে হইতে হৃদয়
     চাহিবে সে রক্তধারা অশ্রুবারিধারে!

কমলে! খুলিয়া ফেল আঁচল তোমার!
     রক্তধারা যেথা ইচ্ছা হোক প্রবাহিত!
বিজয় শুধেছে আজি বন্ধুতার ধার
     প্রেমেরে করায়ে পান বন্ধুর শোণিত!

চলিনু কমলা আজ ছাড়িয়া ধরায়—
     পৃথিবীর সাথে সব ছিঁড়িয়া বন্ধন,
জলাঞ্জলি দিয়া পৃথিবীর মিত্রতায়,
     প্রেমের দাসত্ব রজ্জু করিয়া ছেদন!”