বন-ফুল
ভর্ৎসনা করিবে ছিল নীরদের মনে—
আদরেতে স্বর কিন্তু হয়ে এল নত!
কমলা নয়নজল ভরিয়া নয়নে
মুখপানে চাহি রয় পাগলের মতো!
নীরদ উদ্গামী অশ্রু করি নিবারিত
সবেগে সেখান হতে করিল প্রয়াণ।
উচ্ছ্বাসে কমলা বালা উন্মত্ত চিত
অঞ্চল করিয়া সিক্ত মুছিল নয়ান।
পঞ্চম সর্গ
বিজয় নিভৃতে কী কহে নিশীথে?
কি কথা শুধায় নীরজা বালায়—
দেখেছ, দেখেছ হোথা?
ফুলপাত্র হতে ফুল তুলি হাতে
নীরজা শুনিছে, কুসুম গুণিছে,
মুখে নাই কিছু কথা।
বিজয় শুধায়— কমলা তাহারে
গোপনে, গোপনে ভালবাসে কি রে?
তার কথা কিছু বলে কি সখীরে?
যতন করে কি তাহার তরে।
আবার কহিল, “বলো কমলায়
বিজন কানন হইতে যে তায়
করিয়া উদ্ধার সুখের ছায়ায়
আনিল, হেলা কি করিবে তারে?
যদি সে ভাল না বাসে আমায়
আমি কিন্তু ভালবাসিব তাহায়
যত দিন দেহে শোণিত চলে”।
বিজয় যাইল আবাস ভবনে
নিদ্রায় সাধিতে কুসুমশয়নে।
বালিকা পড়িল ভূমির তলে।