তপতী
ব্রাহ্মণগণের প্রবেশ

পুরোহিত। মহারাজ, অভিষেকের কাজ এখনই আরম্ভ করা কর্তব্য। মনে হচ্ছে বিলম্বে বিঘ্ন হতে পারে। নানাপ্রকার জনশ্রুতি শোনা যাচ্ছে।

কুমারসেন। অভিষেকের কাজ সংক্ষিপ্ত করো। বিলম্ব সইবে না।

পুরোহিত। চলো তবে মহারাজ, ঐ অশ্বত্থবেদিকায়। সকলে জয়ধ্বনি করো।


তুরী ভেরী শঙ্খধ্বনি

সকলে। জয় মহারাজাধিরাজ কাশ্মীরাধিপতির জয়!

কুমারসেন। বাহিরে ঐ কিসের কোলাহল।

অনুচরদের প্রবেশ

অনুচর। খুড়োমহারাজ হঠাৎ উপস্থিত। প্রহরীরা বলছে প্রাণ থাকতে তাঁকে এখানে প্রবেশ করতে দেব না। তারা লড়াই করে মরতে প্রস্তুত। আদেশ করো মহারাজ।

কুমারসেন। শান্ত করো প্রহরীদের। খুড়োমহারাজকে অভ্যর্থনা করে নিয়ে এসো।

[ অনুচরদের প্রস্থান

বিপাশা। আমরা তবে প্রচ্ছন্ন হই।

[ নরেশ ও বিপাশার প্রসহান
চন্দ্রসেনের প্রবেশ

একদল। কোথায় চলেছ চন্দ্রসেন। পাষণ্ড,কপট। কোথায় যাও বিশ্বাসঘাতক। ওকে বন্দী করো।

কুমারসেন। থামো তোমরা। এ কেমন বুদ্ধি তোমাদের। উনি এসেছেন বিশ্বাস করে আমার কাছে।

চন্দ্রসেন। কিছু ভয় নেই, বৎস, শুধু বিশ্বাসের উপর ভর করে আসি নি। ওদের যদি অপঘাতমৃত্যুর ইচ্ছা থাকে নিরাশ করব না।

কুমারসেন। প্রণাম পিতৃব্যদেব। আমার অভিষেকমুহূর্ত তোমার সমাগমে সার্থক হল। আমাকে আশীর্বাদ করো।

চন্দ্রসেন। সে পরে হবে। সময় একটুও নেই। কেন এসেছি শোনো। সহসা জালন্ধররাজ সসৈন্যে কাশ্মীরে উপস্থিত।

কুমারসেন। শুনেছি সে সংবাদ। অভিষেকের কাজ সত্বর সমাধা করব।

চন্দ্রসেন। থাক্‌ এখন অভিষেক। অবিলম্বে চলো তার কাছে আত্মসমর্পণ করবে।

কুমারসেন। আত্মসমর্পণ! যুদ্ধ নয়?

চন্দ্রসেন। সৈন্য কোথায় তোমার।

কুমারসেন। কেন। রাজধানীতে সৈন্যের অভাব নেই।

চন্দ্রসেন। সে তো এখনো তোমার নয়।

কুমারসেন। কিন্তু কাশ্মীরের তো বটে!

চন্দ্রসেন। বিক্রম তো কাশ্মীর চান না, তোমাকেই চান।

কুমারসেন। আমার মান-অপমান কি কাশ্মীরের নয়।