ছড়ার ছবি
তার পরে যে কোথায় গেল, খুঁজে না পায় লোক।
কেঁদে কেঁদে অন্ধ হল রানীমায়ের চোখ.
খোঁজ পড়ে যায় যেমনি কিছু শোনে কানাঘুষায়,
খোঁজে পিণ্ডিদাদনখাঁয়ে, খোঁজে লালামুসায়।
খুঁজে খুঁজে লুধিয়ানায় ঘুরেছে পঞ্জাবে,
গুলজারপুর হয়নি দেখা, শুনছি পরে যাবে।
চঙ্গামঙ্গা দেখে এল সবাই আলমগিরে,
রাওলপিণ্ডি থেকে এল হতাশ হয়ে ফিরে।
ইতিমধ্যে যোগীনদাদা হাৎরাশ জংশনে
গেছেন লেগে চায়ের সঙ্গে পাঁউরুটি-দংশনে।
দিব্যি চলছে খাওয়া,
তারি সঙ্গে খোলা গায়ে লাগছে মিঠে হাওয়া —
এমন সময় সেলাম করলে জৌনপুরের চর ;
জোড় হাতে কয়, ‘ রাজাসাহেব, কঁহা আপ্ কা ঘর। '
দাদা ভাবলেন, সম্মানটা নিতান্ত জম্কালো,
আসল পরিচয়টা তবে না দেওয়াই তো ভালো।
ভাবখানা তাঁর দেখে চরের ঘনালো সন্দেহ,
এ মানুষটি রাজপুত্রই, নয় কভু আর-কেহ।
রাজলক্ষণ এতগুলো একখানা এই গায়
ওরে বাস রে, দেখেনি সে আর কোনো জায়গায়।
তার পরে মাস পাঁচেক
গেছে দুঃখে সুখে কেটে,
হারাধনের খবর গেল
জৌনপুরের স্টেটে।
ইস্টেশনে নির্ভাবনায়
বসে আছেন দাদা,
কেমন করে কী যে হল
লাগল বিষম ধাঁধা।
গুর্খা ফৌজ সেলাম করে
দাঁড়ালো চারদিকে,
ইস্টেশনটা ভরে গেল
আফগানে আর শিখে।
ঘিরে তাঁকে নিয়ে গেল
কোথায় ইটার্সিতে,
দেয় কারা সব জয়ধ্বনি
উর্দুতে ফার্সিতে।
সেখান থেকে মৈনপুরী,
শেষে লছমন্-ঝোলায়
বাজিয়ে সানাই চড়িয়ে
দিল ময়ূরপংখি দোলায়।