চিররূপের বাণী

প্রাঙ্গণে নামল অকালসন্ধ্যার ছায়া

সূর্যগ্রহণের কালিমার মতো।

উঠল ধ্বনি : খোলো দ্বার!

প্রাণপুরুষ ছিল ঘরের মধ্যে,      

সে কেঁপে উঠল চমক খেয়ে।

দরজা ধরল চেপে,

আগলের উপর আগল লাগল।

কম্পিতকণ্ঠে বললে, কে তুমি।

মেঘমন্দ্র-ধ্বনি এল : আমি মাটি-রাজত্বের দূত,

সময় হয়েছে, এসেছি মাটির দেনা আদায় করতে।

ঝন্‌ঝন্‌ বেজে উঠল দ্বারের শিকল,

থরথর কাঁপল প্রাচীর,

হায়-হায় করে ঘরের হাওয়া।

নিশাচরের ডানার ঝাপট আকাশে আকাশে

নিশীথিনীর হৃৎকম্পনের মতো।

ধক্‌ধক্‌ ধক্‌ধক্‌ আঘাতে

খান্‌খান্‌ হল দ্বারের আগল, কপাট পড়ল ভেঙে।

 

কম্পমান কণ্ঠে প্রাণ বললে, হে মাটি, হে নিষ্ঠুর, কী চাও তুমি?

দূত বললে, আমি চাই দেহ।

দীর্ঘনিশ্বাস ফেললে প্রাণ; বললে :

এতকাল আমার লীলা এই দেহে,

এর অণুতে অণুতে আমার নৃত্য,

নাড়ীতে নাড়ীতে ঝংকার,

মুহূর্তেই কি উৎসব দেবে ভেঙে —

দীর্ণ হয়ে যাবে বাঁশি,

চূর্ণ হয়ে যাবে মৃদঙ্গ,

ডুবে যাবে এর দিনগুলি

অতল রাত্রির অন্ধকারে?

দূত বললে, ঋণে বোঝাই তোমার এই দেহ,