পুনশ্চ

শোধ করবার দিন এল —

মাটির ভাণ্ডারে ফিরবে তোমার দেহের মাটি।

প্রাণ বললে, মাটির ঋণ শোধ করে নিতে চাও, নাও —

কিন্তু তার চেয়ে বেশি চাও কেন?

দূত বিদ্রূপ করে বললে, এই তো তোমার নিঃস্ব দেহ,

কৃশ ক্লান্ত কৃষ্ণচতুর্দশীর চাঁদ —

এর মধ্যে বাহুল্য আছে কোথায়?

প্রাণ বললে, মাটিই তোমার, রূপ তো তোমার নয়।

অট্টহাস্যে হেসে উঠল দূত; বললে,

যদি পার দেহ থেকে রূপ নাও ছাড়িয়ে।

প্রাণ বললে, পারবই, এই পণ আমার।

 

প্রাণের মিতা মন। সে গেল আলোক-উৎসের তীর্থে।

বললে জোড়হাত করে :

হে মহাজ্যোতি, হে চিরপ্রকাশ, হে রূপের কল্পনির্ঝর,

স্থূল মাটির কাছে ঘটিয়ো না তোমার সত্যের অপলাপ —

তোমার সৃষ্টির অপমান।

তোমার রূপকে লুপ্ত করে সে কোন্‌ অধিকারে।

আমাকে কাঁদায় কার অভিশাপে।

মন বসল তপস্যায়।

কেটে গেল হাজার বছর, লক্ষ বছর — প্রাণের কান্না থামে না।

পথে পথে বাটপাড়ি,

রূপ চুরি যায় নিমেষে নিমেষে।

সমস্ত জীবলোক থেকে প্রার্থনা ওঠে দিনরাত :

হে রূপকার, হে রূপরসিক,

যে দান করেছ নিজহাতে জড় দানব তাকে কেড়ে নিয়ে যায় যে।

ফিরিয়ে আনো তোমার আপন ধন।

 

যুগের পর যুগ গেল, নেমে এল আকাশবাণী :

মাটির জিনিস ফিরে যায় মাটিতে,

ধ্যানের রূপ রয়ে যায় আমার ধ্যানে।

বর দিলেম হারা রূপ ধরা দেবে,