পুনশ্চ

                    বেলা দুপুর।

লোভ হয় জলের ঝিলিমিলি দেখে —

         তলায় পাতা ছড়িয়ে শেওলাগুলো দুলতে থাকে,

                     মাছগুলো খেলা করে।

          আরো তলায় আছে নাকি নাগকন্যা?

             সোনার কাঁকই দিয়ে আঁচড়ায় লম্বা চুল,

                 আঁকাবাঁকা ছায়া তার জলের ঢেউয়ে।

         ছেলেটার খেয়াল গেল ওইখানে ডুব দিতে —

                 ওই সবুজ স্বচ্ছ জল,

                     সাপের চিকন দেহের মতো।

          ‘কী আছে দেখিই-না' সব তাতে এই তার লোভ।

                 দিল ডুব, দামে গেল জড়িয়ে —

         চেঁচিয়ে উঠে, খাবি খেয়ে, তলিয়ে গেল কোথায়।

                 ডাঙায় রাখাল চরাচ্ছিল গোরু,

      জেলেদের ডিঙি নিয়ে টানাটানি করে তুললে তাকে —

                 তখন সে নিঃসাড়।

         তার পরে অনেক দিন ধরে মনে পড়েছে

                 চোখে কী করে সর্ষেফুল দেখে,

                         আঁধার হয়ে আসে,

         যে মাকে কচি বেলায় হারিয়েছে

                 তার ছবি জাগে মনে,

             জ্ঞান যায় মিলিয়ে।

                 ভারি মজা,

             কী করে মরে সেই মস্ত কথাটা।

      সাথিকে লোভ দেখিয়ে বলে,

‘একবার দেখ্‌-না ডুবে, কোমরে দড়ি বেঁধে,

             আবার তুলব টেনে। '

         ভারি ইচ্ছা করে জানতে ওর কেমন লাগে।

             সাথি রাজি হয় না;

      ও রেগে বলে, ‘ভীতু, ভীতু, ভীতু কোথাকার। '