পুনশ্চ

         সেই প্রতিবেশীদের ভাগ্নে ছিল সাত বছরের,

               তার মাথার উপর চাপিয়ে দিয়ে এল এক ভাঙা হাঁড়ি।

                      হাঁড়ি-চাপা তার কান্না শোনালো যেন ঘানিকলের বাঁশি।

 

গেরস্তঘরে ঢুকলেই সবাই তাকে ‘দূর দূর' করে,

             কেবল তাকে ডেকে এনে দুধ খাওয়ায় সিধু গয়লানী।

তার ছেলেটি মরে গেছে সাত বছর হল,

            বয়সে ওর সঙ্গে তিন দিনের তফাত।

                 ওরই মতো কালোকোলো,

                        নাকটা ওইরকম চ্যাপ্টা।

ছেলেটার নতুন নতুন দৌরাত্মি এই গয়লানী মাসীর 'পরে।

             তার বাঁধা গোরুর দড়ি দেয় কেটে,

                  তার ভাঁড় রাখে লুকিয়ে,

            খয়েরের রঙ লাগিয়ে দেয় তার কাপড়ে।

‘দেখি-না কী হয়' তারই বিবিধ-রকম পরীক্ষা।

তার উপদ্রবে গয়লানীর স্নেহ ওঠে ঢেউ খেলিয়ে।

      তার হয়ে কেউ শাসন করতে এলে

             সে পক্ষ নেয় ওই ছেলেটারই।

 

অম্বিকে মাস্টার আমার কাছে দুঃখ ক'রে গেল,

         ‘শিশুপাঠে আপনার লেখা কবিতাগুলো

             পড়তে ওর মন লাগে না কিছুতেই,

                 এমন নিরেট বুদ্ধি।

      পাতাগুলো দুষ্টুমি ক'রে কেটে রেখে দেয়,

                 বলে ইঁদুরে কেটেছে।

                     এতবড়ো বাঁদর।'

আমি বললুম, ‘সে ত্রুটি আমারই,

             থাকত ওর নিজের জগতের কবি

      তা হলে গুবরে পোকা এত স্পষ্ট হত তার ছন্দে

             ও ছাড়তে পারত না।

কোনোদিন ব্যাঙের খাঁটি কথাটি কি পেরেছি লিখতে,

             আর সেই নেড়ি কুকুরের ট্রাজেডি।'