শ্যামা

             উজ্জ্বল শ্যামল বর্ণ, গলায় পলার হারখানি।

                         চেয়েছি অবাক মানি

                              তার পানে।

                 বড়ো বড়ো কাজল নয়ানে

             অসংকোচে ছিল চেয়ে

                         নবকৈশোরের মেয়ে,

              ছিল তারি কাছাকাছি বয়স আমার।

        স্পষ্ট মনে পড়ে ছবি। ঘরের দক্ষিণে খোলা দ্বার,

             সকালবেলার রোদে বাদামগাছের মাথা

        ফিকে আকাশের নীলে মেলেছে চিকন ঘন পাতা।

             একখানি সাদা শাড়ি কাঁচা কচি গায়ে,

        কালো পাড় দেহ ঘিরে ঘুরিয়া পড়েছে তার পায়ে।

             দুখানি সোনার চুড়ি নিটোল দু হাতে,

                   ছুটির মধ্যাহ্নে পড়া কাহিনীর পাতে

        ওই মূর্তিখানি ছিল। ডেকেছে সে মোরে মাঝে মাঝে

             বিধির খেয়াল যেথা নানাবিধ সাজে

        রচে মরীচিকালোক নাগালের পারে

              বালকের স্বপ্নের কিনারে।

                   দেহ ধরি মায়া

        আমার শরীরে মনে ফেলিল অদৃশ্য ছায়া

                   সূক্ষ্ম স্পর্শময়ী।

             সাহস হল না কথা কই।

        হৃদয় ব্যথিল মোর অতিমৃদু গুঞ্জরিত সুরে —

             ও যে দূরে, ও যে বহুদূরে,

        যত দূরে শিরীষের ঊর্ধ্বশাখা যেথা হতে ধীরে

             ক্ষীণ গন্ধ নেমে আসে প্রাণের গভীরে।

 

                         একদিন পুতুলের বিয়ে,

                              পত্র গেল দিয়ে।

                   কলরব করেছিল হেসে খেলে