আকন্দ
সন্ধ্যা-আলোর সোনার খেয়া পাড়ি যখন দিল গগন-পারে
              অকূল অন্ধকারে,
          ছম্‌ছমিয়ে এল রাতি ভুবনডাঙার মাঠে
      একলা আমি গোয়ালপাড়ার বাটে।
নতুন-ফোটা গানের কুঁড়ি দেব বলে দিনুর হাতে আনি
         মনে নিয়ে সুরের গুন্‌গুনানি
চলেছিলেম, এমন সময় যেন সে কোন্‌ পরীর কণ্ঠখানি
  বাতাসেতে বাজিয়ে দিল বিনা ভাষার বাণী;
        বললে আমায়, “দাঁড়াও ক্ষণেক-তরে,
ওগো পথিক, তোমার লাগি চেয়ে আছি যুগে যুগান্তরে।
        আমায় নেবে চিনে
     সেই সুলগন এল এতদিনে।
পথের ধারে দাঁড়িয়ে আমি, মনে গোপন আশা
  কবির ছন্দে বাঁধব আমার বাসা।”
  দেখা হল, চেনা হল সাঁঝের আঁধারেতে;
বলে এলেম, “তোমার আসন কাব্যে দেব পেতে।”

 

সেই কথা আজ পড়ল মনে হঠাৎ হেথায় এসে
            সাগরপারের দেশে;
মন-কেমনের হাওয়ার পাকে অনেক স্মৃতি বেড়ায় মনে ঘুরে,
      তারি মধ্যে বাজল করুণ সুরে—
      ‘ভুলো না গো ভুলো না এই পথ-বাসিনীর কথা,
আজও আমি দাঁড়িয়ে আছি, বাসা আমার কোথা?’
    শপথ আমার, তোমরা বোলো তারে
তার কথাটি দাঁড়িয়েছিল মনের পথের ধারে,
    বোলো তারে চোখের দেখা ফুটেছে আজ গানে—
              লিখনখানি রাখিনু এইখানে।
                                   আকন্দবল্লভ রবি

 

       যেদিন প্রথম কবিগান