পূরবী
        বসন্তের জাগালো আহ্বান
           ছন্দের উৎসবসভাতলে,
       সেদিন মালতী যূথী জাতি
       কৌতূহলে উঠেছিল মাতি,
           ছুটে এসেছিল দলে দলে।
আসিল মল্লিকা চম্পা কুরুবক কাঞ্চন করবী,
সুরের বরণমাল্যে সবারে বরিয়া নিল কবি।
কী সংকোচে এলে না যে, সভার দুয়ার হল বন্ধ।
           সব পিছে রহিলে আকন্দ।

 

       মোরে তুমি লজ্জা কর নাই
       আমার সম্মান মানি তাই,
           আমারে সহজে নিলে ডাকি।
       আপনারে আপনি জানালে,
       উপেক্ষার ছায়ার আড়ালে
           পরিচয় রাখিলে না ঢাকি।
মনে পড়ে একদিন সন্ধ্যাবেলা চলেছিনু একা
তুমি বুঝি ভেবেছিলে কী জানি না পাই পাছে দেখা,
অদৃশ্য লিখনখানি তোমার করুণ ভীরু গন্ধ
           বায়ুভরে পাঠালে আকন্দ।

 

       হিয়া মোর উঠিল চমকি,
       পথমাঝে দাঁড়ানু থমকি,
              তোমারে খুঁজিনু চারি ধারে।
       পল্লবের আবরণ টানি
       আছিলে কাব্যের দুয়োরাণী
              পথপ্রান্তে গোপন আঁধারে।
সঙ্গী যারা ছিল ঘিরে তারা সবে নামগোত্রহীন,
কাড়িতে জানে না তারা পথিকের আঁখি উদাসীন।
ভরিল আমার চিত্ত বিষ্ময়ের গভীর আনন্দ,
              চিনিলাম তোমারে আকন্দ।