হে বিরাট নদী,

       অদৃশ্য নিঃশব্দ তব জল

              অবিচ্ছিন্ন অবিরল

                     চলে নিরবধি ।

স্পন্দনে শিহরে শূন্য তব রুদ্র কায়াহীন বেগে ;

     বস্তুহীন প্রবাহের প্রচণ্ড আঘাত লেগে

              পুঞ্জ পুঞ্জ বস্তুফেনা উঠে জেগে ;

          ক্রন্দসী কাঁদিয়া ওঠে বহ্নিভরা মেঘে

     আলোকের তীব্রচ্ছটা বিচ্ছুরিয়া উঠে বর্ণস্রোতে

              ধাবমান অন্ধকার হতে ;

     ঘুর্ণাচক্রে ঘুরে ঘুরে মরে

          স্তরে স্তরে

              সূর্যচন্দ্রতারা যত

                     বুদ্‌বুদের মতো।

         

হে ভৈরবী, ওগো বৈরাগিণী,

চলেছ যে নিরুদ্দেশ সেই চলা তোমার রাগিণী,

                      শব্দহীন সুর।

                      অন্তহীন দূর

              তোমারে কি নিরন্তর দেয় সাড়া।

     সর্বনাশা প্রেমে তার নিত্য তাই তুমি ঘরছাড়া।

              উন্মত্ত সে-অভিসারে

               তব বক্ষোহারে

ঘন ঘন লাগে দোলা—ছড়ায় অমনি

              নক্ষত্রের   মণি ;

আঁধারিয়া ওড়ে শূন্যে ঝোড়ো এলোচুল ;

          দুলে উঠে বিদ্যুতের দুল ;

              অঞ্চল আকুল

          গড়ায় কম্পিত তৃণে,

চঞ্চল পল্লবপুঞ্জে বিপিনে বিপিনে ;

     বারম্বার ঝরে ঝরে পড়ে ফুল