বলাকা

তব নৃত্যমন্দাকিনী নিত্য ঝরি ঝরি

     তুলিতেছে শুচি করি

          মৃত্যস্নানে বিশ্বের জীবন।

নিঃশেষে নির্মল নীলে বিকাশিছে নিখিল গগন।

 

     ওরে কবি, তোরে আজ করেছে উতলা

     ঝংকারমুখরা এই ভুবনমেখলা,

অলক্ষিত চরণের অকারণ অবারণ চলা।

          নাড়ীতে নাড়ীতে তোর চঞ্চলের শুনি পদধ্বনি,

               বক্ষ তোর উঠে রনরনি।

                     নাহি জানে কেউ

রক্তে তোর নাচে আজি সমুদ্রের ঢেউ,

     কাঁপে আজি অরণ্যের ব্যাকুলতা ;

          মনে আজি পড়ে সেই কথা—

              যুগে যুগে এসেছি চলিয়া,

                      স্খলিয়া স্খলিয়া

                             চুপে চুপে

                            রূপ হতে রূপে

                             প্রাণ হতে প্রাণে।

                            নিশীথে প্রভাতে

                      যা - কিছু পেয়েছি হাতে

              এসেছি করিয়া ক্ষয় দান হতে দানে,

                      গান হতে গানে।

 

ওরে দেখ্‌ সেই স্রোত হয়েছে মুখর,

     তরণী কাঁপিছে থরথর।

তীরের সঞ্চয় তোর পড়ে থাক্‌ তীরে,

     তাকাস নে ফিরে।

          সম্মুখের বাণী

              নিক তোরে টানি

                     মহাস্রোতে

     পশ্চাতের কোলাহল হতে

              অতল আঁধারে— অকূল আলোতে।