জুতা-আবিষ্কার

কহিলা হবু, ‘শুন গো গোবুরায়,

       কালিকে আমি ভেবেছি সারা রাত্র—

মলিন ধূলা লাগিবে কেন পায়

       ধরণীমাঝে চরণ-ফেলা মাত্র?

তোমরা শুধু বেতন লহ বাঁটি,

       রাজার কাজে কিছুই নাহি দৃষ্টি।

আমার মাটি লাগায় মোরে মাটি,

       রাজ্যে মোর একি এ অনাসৃষ্টি!

             শীঘ্র এর করিবে প্রতিকার

            নহিলে কারো রক্ষা নাহি আর।’

 

শুনিয়া গোবু ভাবিয়া হল খুন,

       দারুণ ত্রাসে ঘর্ম বহে গাত্রে।

পণ্ডিতের হইল মুখ চুন,

       পাত্রদের নিদ্রা নাহি রাত্রে।

রান্নাঘরে নাহিকো চড়ে হাঁড়ি,

       কান্নাকাটি পড়িল বাড়িমধ্যে,

অশ্রুজলে ভাসায়ে পাকা দাড়ি

       কহিলা গোবু হবুর পাদপদ্মে,

            ‘যদি না ধুলা লাগিবে তব পায়ে,

            পায়ের ধুলা পাইব কী উপায়ে!’

 

শুনিয়া রাজা ভাবিল দুলি দুলি,

       কহিল শেষে, ‘কথাটা বটে সত্য—

কিন্তু আগে বিদায় করো ধুলি,

       ভাবিয়ো পরে পদধুলির তত্ত্ব।

ধুলা-অভাবে না পেলে পদধুলা

       তোমরা সবে মাহিনা খাও মিথ্যে,

কেন বা তবে পুষিনু এতগুলা

       উপাধি-ধরা বৈজ্ঞানিক ভৃত্যে?